২১ জুন ২০২৫, শনিবার, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বগটুই কাণ্ডে আক্রান্তদের জুম্মার নামায আদায়ের ব্যবস্থা করল প্রশাসন  

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার
  • / 27

ছবি-তথাগত চক্রবর্তী

দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট: কেউ স্ত্রী কেউ স্ত্রী ও কন্যা সন্তান দুই-ই হারিয়েছেন মানুষের হিংস্রতায়। এদিকে পবিত্র রমযানও শুরু হচ্ছে আগামী রবিবার। তার আগেই এদিন (শুক্রবার) ছিল শেষ জুম্মা। সেদিকে খেয়াল রেখেই স্বজন হারানো মিহিলাল সেখ ও সেখলাল সেখদের নামায আদায়ের ব্যবস্থা করল প্রশাসন। এদিন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বগটুই লাগোয়া কুমাড্ডায় সেখলাল সেখের মেয়ে সাজিনার বাড়ি থেকে আক্রান্তদের বগটুইয়ের বড় মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে গাড়িতে করে তাঁদের মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। নামায শেষে সুষ্ঠুভাবেই ঘরে ফেরেন তাঁরা। যেহেতু একুশে মার্চ বড়শাল গ্রাম-পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু সেখের খুনের পর এই পরিবারগুলোর উপর চরম আক্রমণ চালায় নিহত ভাদু সেখের অনুগামীরা সেকারণে প্রশাসনের তরফে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

উল্লেখ্য সে রাতের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মিহিলাল সেখ হারিয়েছেন নিজের কন্যা ও স্ত্রীকে। সেখলাল সেখের স্ত্রী নাজেমা বিবি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কয়েকদিন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। ঘরছাড়ারা কিছুদিন সাঁইথিয়ার কাছে বিভিন্ন গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর কয়েকদিন আগে কুমাড্ডায় সেখলাল সেখের মেয়ে সাজিনার বাড়িতে ফিরে আসেন। এদিন সেখান থেকেই তাঁদের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে জুম্মার নামাযের ব্যবস্থা করে প্রশাসন।

আরও পড়ুন: ফ্লুর প্রাদুর্ভাব: উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে রোগী, সরকারকে সতর্ক করল বিশেষজ্ঞরা

অন্যদিকে এদিন জেলা পুলিশ প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের উদ্যোগে হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে বুলবুলি খাতুন (২০) এবং তার নাবালক ভাই ইরফান সেখকে বাড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালের আউটডোরে নিয়ে যান। সেখানে উভয়ের হাত ও পায়ের দগ্ধস্থানের ড্রেসিং করা হয়। তারপর ফের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। ড্রেসিংয়ের জন্য তাদের আগামী সোমবার ও বুধবার আউটডোরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান আহত দুইজনের মা আনোয়ারা বেওয়া।

আরও পড়ুন: প্রতিদিনই বিদ্বেষ-বৈষম্যের শিকার জার্মানির মুসলিমরা!

আনোয়ারা বিবি (বেওয়া) বলেন, মমতা দিদির সরকার আমাদের জন্য খুব করছে।

আরও পড়ুন: বিমানবন্দর থেকে গভীর রাতেও মিলবে শহরতলীর বাস, উদ্যোগী প্রশাসন

হাসপাতাল থেকে সকলেই ছাড়া পেলেও এখনও ছাড়া হয়নি আতাহার বেওয়াকে (৫০)। মাঝে মাঝে কথা বলছেন। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে। ‘বায়োকেমিক্যাল প্যারামিটার’-এর পরিমাপ বলে দিচ্ছে রোগীর অবস্থা অবনতির দিকে, এমনই জানান  হাসপাতালের এক চিকিৎসক।

অন্যদিকে শুক্রবার সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প পান্থশ্রীতে আনারুল সহ ছয়জনকে জেরা করা হয়। একইসঙ্গে অগ্নিসংযোগে বগটুই খুনের মামলার মূল অভিযোগকারী অফিসার ধ্রুব দত্ত এসআই গোলক ঘোষ এবং দমকল ওসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।

প্রশাসন বগটুই গ্রামে নিরাপত্তাব্যবস্থা যেমন বাড়িয়েছে, তেমনি উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের সঙ্গেও আধিকারিকরা কথা বলেছেন। জানা গিয়েছে তৃণমূলের তরফে রামপুরহাটের এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বগটুই গ্রামের ২২ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং একাদশ শ্রেণির ৬১জন পরীক্ষার্থীদের থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা করেছে শাসক দল। বিষয়টি সকলেরই প্রশংসা কুড়িয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বগটুই কাণ্ডে আক্রান্তদের জুম্মার নামায আদায়ের ব্যবস্থা করল প্রশাসন  

আপডেট : ১ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার

দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট: কেউ স্ত্রী কেউ স্ত্রী ও কন্যা সন্তান দুই-ই হারিয়েছেন মানুষের হিংস্রতায়। এদিকে পবিত্র রমযানও শুরু হচ্ছে আগামী রবিবার। তার আগেই এদিন (শুক্রবার) ছিল শেষ জুম্মা। সেদিকে খেয়াল রেখেই স্বজন হারানো মিহিলাল সেখ ও সেখলাল সেখদের নামায আদায়ের ব্যবস্থা করল প্রশাসন। এদিন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বগটুই লাগোয়া কুমাড্ডায় সেখলাল সেখের মেয়ে সাজিনার বাড়ি থেকে আক্রান্তদের বগটুইয়ের বড় মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে গাড়িতে করে তাঁদের মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। নামায শেষে সুষ্ঠুভাবেই ঘরে ফেরেন তাঁরা। যেহেতু একুশে মার্চ বড়শাল গ্রাম-পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু সেখের খুনের পর এই পরিবারগুলোর উপর চরম আক্রমণ চালায় নিহত ভাদু সেখের অনুগামীরা সেকারণে প্রশাসনের তরফে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

উল্লেখ্য সে রাতের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মিহিলাল সেখ হারিয়েছেন নিজের কন্যা ও স্ত্রীকে। সেখলাল সেখের স্ত্রী নাজেমা বিবি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কয়েকদিন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। ঘরছাড়ারা কিছুদিন সাঁইথিয়ার কাছে বিভিন্ন গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর কয়েকদিন আগে কুমাড্ডায় সেখলাল সেখের মেয়ে সাজিনার বাড়িতে ফিরে আসেন। এদিন সেখান থেকেই তাঁদের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে জুম্মার নামাযের ব্যবস্থা করে প্রশাসন।

আরও পড়ুন: ফ্লুর প্রাদুর্ভাব: উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে রোগী, সরকারকে সতর্ক করল বিশেষজ্ঞরা

অন্যদিকে এদিন জেলা পুলিশ প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের উদ্যোগে হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে বুলবুলি খাতুন (২০) এবং তার নাবালক ভাই ইরফান সেখকে বাড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালের আউটডোরে নিয়ে যান। সেখানে উভয়ের হাত ও পায়ের দগ্ধস্থানের ড্রেসিং করা হয়। তারপর ফের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। ড্রেসিংয়ের জন্য তাদের আগামী সোমবার ও বুধবার আউটডোরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান আহত দুইজনের মা আনোয়ারা বেওয়া।

আরও পড়ুন: প্রতিদিনই বিদ্বেষ-বৈষম্যের শিকার জার্মানির মুসলিমরা!

আনোয়ারা বিবি (বেওয়া) বলেন, মমতা দিদির সরকার আমাদের জন্য খুব করছে।

আরও পড়ুন: বিমানবন্দর থেকে গভীর রাতেও মিলবে শহরতলীর বাস, উদ্যোগী প্রশাসন

হাসপাতাল থেকে সকলেই ছাড়া পেলেও এখনও ছাড়া হয়নি আতাহার বেওয়াকে (৫০)। মাঝে মাঝে কথা বলছেন। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে। ‘বায়োকেমিক্যাল প্যারামিটার’-এর পরিমাপ বলে দিচ্ছে রোগীর অবস্থা অবনতির দিকে, এমনই জানান  হাসপাতালের এক চিকিৎসক।

অন্যদিকে শুক্রবার সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প পান্থশ্রীতে আনারুল সহ ছয়জনকে জেরা করা হয়। একইসঙ্গে অগ্নিসংযোগে বগটুই খুনের মামলার মূল অভিযোগকারী অফিসার ধ্রুব দত্ত এসআই গোলক ঘোষ এবং দমকল ওসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।

প্রশাসন বগটুই গ্রামে নিরাপত্তাব্যবস্থা যেমন বাড়িয়েছে, তেমনি উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের সঙ্গেও আধিকারিকরা কথা বলেছেন। জানা গিয়েছে তৃণমূলের তরফে রামপুরহাটের এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বগটুই গ্রামের ২২ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং একাদশ শ্রেণির ৬১জন পরীক্ষার্থীদের থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা করেছে শাসক দল। বিষয়টি সকলেরই প্রশংসা কুড়িয়েছে।