১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় হামলা বন্ধে রাষ্ট্রসংঘে প্রস্তাবে ১৪৯ দেশের সমর্থন, নীরব ভারত

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার
  • / 68

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক:  গাজায় ইজরায়েলের হামলা বন্ধে অবিলম্বে, নি:শর্তে, স্থায়ী ‘হামলাবিরতি’ দাবি করে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের এক জরুরি বৈঠক আহ্বান করে সর্বসম্মতভাবে এক প্রস্তাব গৃহীত হল। বেশিরভাগ সদস্য দেশ এই প্রস্তাব সমর্থন করলেও ভারত সমর্থন না করে ভোটদানেই বিরত রইল।

এর আগে নিরাপত্তা পরিষদেও এমন এক প্রস্তাব নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা ভেটো প্রয়োগ করে সেই প্রস্তাব নিতে বাধা দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত সাধারণ পরিষদেই ওই প্রস্তাব নেওয়া হল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সাধারণ পরিষদের ওই ইজরায়েল-বিরোধী প্রস্তাবে ১৪৯ সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা সমর্থন করেন।

আরও পড়ুন: ইসরাইলে সরাসরি আঘাত হানল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র, তেল আবিবে বিস্ফোরণ ও ধ্বংসের খবর

১২ টি দেশের প্রতিনিধিরা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন। আর ১৯ দেশের প্রতিনিধিরা ভোটদানে বিরত থেকে কার্যত ইজরায়েলের পক্ষ নেন। তাঁদের মধ্যে ভারতের প্রতিনিধিও ছিলেন। ২০ দেশের প্রতিনিধিরা উদ্যোগী হয়ে ইজরায়েল-বিরোধী এই প্রস্তাব আনে। আমেরিকা, ইজরায়েল, হাঙ্গেরি, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ের প্রতিনিধিরা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। আরও ৭ দেশ বিরোধিতা করে।

আরও পড়ুন: ইউরোপীয় সংসদে প্রথমবার ‘গণহত্যা’ তকমা পাবে গাজার যুদ্ধ? 

এই প্রস্তাবে গাজায় মানবিক সাহায্য,ওষুধ  এবং ত্রাণ পাঠানোর ক্ষেত্রেও ইজরায়েল যেভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে গাজাবাসীদের অনাহারে, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে তার তীব্র নিন্দা করা হয়। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে এই যে প্রস্তাব গৃহীত হল, তা মানার কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।

আরও পড়ুন: গাজায় ত্রাণ পৌঁছতে গিয়ে গ্রেফতার পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ!

তবে আন্তর্জাতিকভাবে এই প্রস্তাব এতগুলি দেশের প্রতিনিধির সমর্থনে গৃহীত হওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। এই জরুরি অধিবেশনের সূচনা-ভাষণে সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ফিলেমন ইয়াং বলেন, ২০ মাস হয়ে গেল, এবার গাজায় ইজরায়েলের সর্বগ্রাসী হামলা বন্ধ হোক।

নিরাপত্তা পরিষদ ইদানীং যেভাবে সব ব্যাপারে নীরব দর্শকের ভূমিকা গ্রহণ করে বিশ্বজুড়ে শান্তি এবং স্থিরতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে তার কর্তব্যকে উপেক্ষা করছে তারও নিন্দা করেন তিনি।  ইয়াং বলেন, গাজায় যা হচ্ছে তা কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। সেখানকার মানুষজনকে পানীয় জল, খাবার, ওষুধ যাতে সরবরাহ করা যায় তার জন্য সারা বিশ্বের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কে গাজা এবং ইজরায়েলের বিরোধ মেটাতে ফ্রান্স এবং সওদি আরবের পৌরোহিত্যে যে বৈঠক হবে তাতে যদি সদর্থক কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ। গাজায় ইজরায়েলের হামলার ৬১৪তম দিন ছিল এদিন।

সেকথা উল্লেখ করে ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি রিয়াদ মনসৌর ওই প্রস্তাবের সমর্থনে সব দেশকে ভোট দিতে আহ্বান করে বলেন, গাজায় যে গণহত্যা চলছে তা বন্ধে সারা বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ হয়ে যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নিক।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাজায় হামলা বন্ধে রাষ্ট্রসংঘে প্রস্তাবে ১৪৯ দেশের সমর্থন, নীরব ভারত

আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক:  গাজায় ইজরায়েলের হামলা বন্ধে অবিলম্বে, নি:শর্তে, স্থায়ী ‘হামলাবিরতি’ দাবি করে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের এক জরুরি বৈঠক আহ্বান করে সর্বসম্মতভাবে এক প্রস্তাব গৃহীত হল। বেশিরভাগ সদস্য দেশ এই প্রস্তাব সমর্থন করলেও ভারত সমর্থন না করে ভোটদানেই বিরত রইল।

এর আগে নিরাপত্তা পরিষদেও এমন এক প্রস্তাব নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা ভেটো প্রয়োগ করে সেই প্রস্তাব নিতে বাধা দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত সাধারণ পরিষদেই ওই প্রস্তাব নেওয়া হল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সাধারণ পরিষদের ওই ইজরায়েল-বিরোধী প্রস্তাবে ১৪৯ সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা সমর্থন করেন।

আরও পড়ুন: ইসরাইলে সরাসরি আঘাত হানল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র, তেল আবিবে বিস্ফোরণ ও ধ্বংসের খবর

১২ টি দেশের প্রতিনিধিরা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন। আর ১৯ দেশের প্রতিনিধিরা ভোটদানে বিরত থেকে কার্যত ইজরায়েলের পক্ষ নেন। তাঁদের মধ্যে ভারতের প্রতিনিধিও ছিলেন। ২০ দেশের প্রতিনিধিরা উদ্যোগী হয়ে ইজরায়েল-বিরোধী এই প্রস্তাব আনে। আমেরিকা, ইজরায়েল, হাঙ্গেরি, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ের প্রতিনিধিরা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। আরও ৭ দেশ বিরোধিতা করে।

আরও পড়ুন: ইউরোপীয় সংসদে প্রথমবার ‘গণহত্যা’ তকমা পাবে গাজার যুদ্ধ? 

এই প্রস্তাবে গাজায় মানবিক সাহায্য,ওষুধ  এবং ত্রাণ পাঠানোর ক্ষেত্রেও ইজরায়েল যেভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে গাজাবাসীদের অনাহারে, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে তার তীব্র নিন্দা করা হয়। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে এই যে প্রস্তাব গৃহীত হল, তা মানার কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।

আরও পড়ুন: গাজায় ত্রাণ পৌঁছতে গিয়ে গ্রেফতার পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ!

তবে আন্তর্জাতিকভাবে এই প্রস্তাব এতগুলি দেশের প্রতিনিধির সমর্থনে গৃহীত হওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। এই জরুরি অধিবেশনের সূচনা-ভাষণে সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ফিলেমন ইয়াং বলেন, ২০ মাস হয়ে গেল, এবার গাজায় ইজরায়েলের সর্বগ্রাসী হামলা বন্ধ হোক।

নিরাপত্তা পরিষদ ইদানীং যেভাবে সব ব্যাপারে নীরব দর্শকের ভূমিকা গ্রহণ করে বিশ্বজুড়ে শান্তি এবং স্থিরতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে তার কর্তব্যকে উপেক্ষা করছে তারও নিন্দা করেন তিনি।  ইয়াং বলেন, গাজায় যা হচ্ছে তা কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। সেখানকার মানুষজনকে পানীয় জল, খাবার, ওষুধ যাতে সরবরাহ করা যায় তার জন্য সারা বিশ্বের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কে গাজা এবং ইজরায়েলের বিরোধ মেটাতে ফ্রান্স এবং সওদি আরবের পৌরোহিত্যে যে বৈঠক হবে তাতে যদি সদর্থক কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ। গাজায় ইজরায়েলের হামলার ৬১৪তম দিন ছিল এদিন।

সেকথা উল্লেখ করে ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি রিয়াদ মনসৌর ওই প্রস্তাবের সমর্থনে সব দেশকে ভোট দিতে আহ্বান করে বলেন, গাজায় যে গণহত্যা চলছে তা বন্ধে সারা বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ হয়ে যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নিক।