১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুরীতে ২কোটির জমি বিনামূল্যে,‘বিশ্ববাংলা ভবন’-এর জন্য বাংলাকে উপহার ওড়িশার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৩ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার
  • / 31

পুবের কলম প্রতিবেদক: ওড়িশার সঙ্গে বাংলার পুরনো সম্পর্ক আরও মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। কিছু দিন আগে পুরীতে গিয়ে বাংলার পর্যটকদের জন্য ‘হলিডে হোম’ করার জমি দেখে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জমি বিনামূল্যে রাজ্যের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওড়িশা সরকার। ‘বিশ্ববাংলা ভবন’তৈরির জন্য দু’একর জমির কোনও মূল্য নেবে না ওড়িশা সরকার।

যে এলাকায় এই ভবনটি তৈরি হবে সেখানে নতুন টাউনশিপ তৈরি হচ্ছে। একটা এয়ারপোর্টও থাকবে। ওড়িশা সরকার জায়গাটির নাম দিয়েছে ‘নতুন পুরী’। ঢেলে সাজানোর জন্য নানা পরিকল্পনা নিয়েছে নবীন পট্টনায়েক সরকার। ওই এলাকায় জমির দাম বর্তমানে এক কোটি টাকা প্রতি একর। কিন্তু জমির দাম বাবদ রাজ্যকে একটি টাকাও দিতে হবে না। পূণ্যার্থীরা স্বর্গদ্বার থেকে যাতে সরাসরি মন্দিরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত বিনা বাধায় যেতে পারেন তার জন্য রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। এর জন্য রাস্তার ধারের পুরনো বাড়ি ভাঙা হবে। এ ছাড়া তৈরি হবে উড়ালপুল।

আরও পড়ুন: বাংলার প্রাচীন পাণ্ডুলিপির ডিজিটালাইজেশন

রাজ্য যেখানে জমি পেয়েছে, সেই জায়গার পরিবেশ খুবই মনোরম। রাজ্যের নতুন ভবনে শতাধিক পূণ্যার্থীর থাকার ব্যবস্থা হবে। ওড়িশা-বাংলার সম্পর্কের ইতিহাসের কথা মনে রেখে ভবনটি সাজানো হবে।

আরও পড়ুন: সিকিমে দুর্ঘটনার কবলে বাংলা ও ওড়িশার পর্যটকরা, নিখোঁজ ৯ জন

প্রসঙ্গত, পুরীর মন্দিরের আদলে দিঘায় একটি মন্দির তৈরি করছে রাজ্য সরকার। সেই মন্দিরের কাজ খতিয়ে দেখতে সোমবার দিঘা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছরের মধ্যে ওই মন্দির তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা উদ্বোধনে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েককে ডাকা হতে পারে।

আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টির অশনি সংকেত বাংলায়, ভাসতে পারে সাত জেলা

অন্যদিকে,  জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে কার্যত ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও এখনও এক বছর হাতে সময় রয়েছে। কিন্তু এক বছর আগে থেকেই কার্যত যুদ্ধের সলতে পাকাতে শুরু করে দিয়েছে সব পক্ষই। অস্বীকার করার উপায় নেই সেই লড়াইয়ে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যেতেই অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে জাতীয় দল কংগ্রেস। তাই এবার বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াই হতে চলেছে দেশের একাধিক রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির অঘোষিত জোটের। সেই জোটের নেতৃত্বের আসনে আবার ক্রমশই নিজেকে আসীন করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পাশে যে সব আঞ্চলিক দলগুলির নেতারা এসে দাঁড়াচ্ছেন তাঁদের অন্যতম ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজু জনতা দলের সুপ্রিমো নবীন পট্টনায়েক। এবার সেই পাশে দাঁড়ানোর হাতেগরমের প্রমাণ মিলল পুরীতে ‘বিশ্ববাংলা ভবন’ তৈরির জন্য কয়েক কোটি টাকার ২ একর জমি বিনামূল্যেই বাংলাকে প্রদান করার সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে।

নবীন পট্টনায়ক কোনওদিনই সেভাবে জাতীয় স্তরের রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ দেখাননি। আবার কোনও দলের সঙ্গে বা নেতার সঙ্গে তাঁর খুব সখ্যতা রয়েছে বা বিরোধ রয়েছে এমনটাও দেখা যায় না। কার্যত নিজ রাজ্য আর নিজ দল নিয়েই থাকতে পছন্দ করেন নবীন। এহেন মানুষটির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ এবং বৈঠক গত মাসেই জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে সকলের নজর কেড়ে নিয়েছিল। যদিও দুই পক্ষের তরফেই তখন দাবি করা হয়েছিল রাজনীতি নিয়ে সেভাবে কোনও আলোচনা হয়নি। কিন্তু এখনকার ছবিটাই বলে দিচ্ছে, রাজনীতির দুই নেতানেত্রীই একে অপরের ওপর আস্থা রাখছেন। আগামী দিনে এই আস্থাই কিন্তু নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডাদের গাড্ডায় ফেলার জন্য বড় ভূমিকা নিয়ে নিতে পারে। বিজেপিকে ২০২৪ সালের লোকসভা যুদ্ধে হারাতে মমতার ফর্মুলাকে সমর্থন জানিয়েছেন নবীন। অর্থাৎ যে যার নিজ নিজ রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে সর্বশক্তি দিয়ে। কংগ্রেস এই সব আঞ্চলিক দলের কাছে কার্যত ব্রাত্যই। তাই মূল লড়াইটাই হতে চ্ছে বিজেপি বনাম এই আঞ্চলিক দলগুলির। বাংলার পাশাপাশি বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, দিল্লি, পঞ্জাব, ফলাফল অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করবেন এই আঞ্চলিক দলগুলি।

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পুরীতে ২কোটির জমি বিনামূল্যে,‘বিশ্ববাংলা ভবন’-এর জন্য বাংলাকে উপহার ওড়িশার

আপডেট : ৩ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: ওড়িশার সঙ্গে বাংলার পুরনো সম্পর্ক আরও মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। কিছু দিন আগে পুরীতে গিয়ে বাংলার পর্যটকদের জন্য ‘হলিডে হোম’ করার জমি দেখে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জমি বিনামূল্যে রাজ্যের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওড়িশা সরকার। ‘বিশ্ববাংলা ভবন’তৈরির জন্য দু’একর জমির কোনও মূল্য নেবে না ওড়িশা সরকার।

যে এলাকায় এই ভবনটি তৈরি হবে সেখানে নতুন টাউনশিপ তৈরি হচ্ছে। একটা এয়ারপোর্টও থাকবে। ওড়িশা সরকার জায়গাটির নাম দিয়েছে ‘নতুন পুরী’। ঢেলে সাজানোর জন্য নানা পরিকল্পনা নিয়েছে নবীন পট্টনায়েক সরকার। ওই এলাকায় জমির দাম বর্তমানে এক কোটি টাকা প্রতি একর। কিন্তু জমির দাম বাবদ রাজ্যকে একটি টাকাও দিতে হবে না। পূণ্যার্থীরা স্বর্গদ্বার থেকে যাতে সরাসরি মন্দিরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত বিনা বাধায় যেতে পারেন তার জন্য রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। এর জন্য রাস্তার ধারের পুরনো বাড়ি ভাঙা হবে। এ ছাড়া তৈরি হবে উড়ালপুল।

আরও পড়ুন: বাংলার প্রাচীন পাণ্ডুলিপির ডিজিটালাইজেশন

রাজ্য যেখানে জমি পেয়েছে, সেই জায়গার পরিবেশ খুবই মনোরম। রাজ্যের নতুন ভবনে শতাধিক পূণ্যার্থীর থাকার ব্যবস্থা হবে। ওড়িশা-বাংলার সম্পর্কের ইতিহাসের কথা মনে রেখে ভবনটি সাজানো হবে।

আরও পড়ুন: সিকিমে দুর্ঘটনার কবলে বাংলা ও ওড়িশার পর্যটকরা, নিখোঁজ ৯ জন

প্রসঙ্গত, পুরীর মন্দিরের আদলে দিঘায় একটি মন্দির তৈরি করছে রাজ্য সরকার। সেই মন্দিরের কাজ খতিয়ে দেখতে সোমবার দিঘা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছরের মধ্যে ওই মন্দির তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা উদ্বোধনে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েককে ডাকা হতে পারে।

আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টির অশনি সংকেত বাংলায়, ভাসতে পারে সাত জেলা

অন্যদিকে,  জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে কার্যত ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও এখনও এক বছর হাতে সময় রয়েছে। কিন্তু এক বছর আগে থেকেই কার্যত যুদ্ধের সলতে পাকাতে শুরু করে দিয়েছে সব পক্ষই। অস্বীকার করার উপায় নেই সেই লড়াইয়ে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যেতেই অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে জাতীয় দল কংগ্রেস। তাই এবার বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াই হতে চলেছে দেশের একাধিক রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির অঘোষিত জোটের। সেই জোটের নেতৃত্বের আসনে আবার ক্রমশই নিজেকে আসীন করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পাশে যে সব আঞ্চলিক দলগুলির নেতারা এসে দাঁড়াচ্ছেন তাঁদের অন্যতম ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজু জনতা দলের সুপ্রিমো নবীন পট্টনায়েক। এবার সেই পাশে দাঁড়ানোর হাতেগরমের প্রমাণ মিলল পুরীতে ‘বিশ্ববাংলা ভবন’ তৈরির জন্য কয়েক কোটি টাকার ২ একর জমি বিনামূল্যেই বাংলাকে প্রদান করার সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে।

নবীন পট্টনায়ক কোনওদিনই সেভাবে জাতীয় স্তরের রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ দেখাননি। আবার কোনও দলের সঙ্গে বা নেতার সঙ্গে তাঁর খুব সখ্যতা রয়েছে বা বিরোধ রয়েছে এমনটাও দেখা যায় না। কার্যত নিজ রাজ্য আর নিজ দল নিয়েই থাকতে পছন্দ করেন নবীন। এহেন মানুষটির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ এবং বৈঠক গত মাসেই জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে সকলের নজর কেড়ে নিয়েছিল। যদিও দুই পক্ষের তরফেই তখন দাবি করা হয়েছিল রাজনীতি নিয়ে সেভাবে কোনও আলোচনা হয়নি। কিন্তু এখনকার ছবিটাই বলে দিচ্ছে, রাজনীতির দুই নেতানেত্রীই একে অপরের ওপর আস্থা রাখছেন। আগামী দিনে এই আস্থাই কিন্তু নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডাদের গাড্ডায় ফেলার জন্য বড় ভূমিকা নিয়ে নিতে পারে। বিজেপিকে ২০২৪ সালের লোকসভা যুদ্ধে হারাতে মমতার ফর্মুলাকে সমর্থন জানিয়েছেন নবীন। অর্থাৎ যে যার নিজ নিজ রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে সর্বশক্তি দিয়ে। কংগ্রেস এই সব আঞ্চলিক দলের কাছে কার্যত ব্রাত্যই। তাই মূল লড়াইটাই হতে চ্ছে বিজেপি বনাম এই আঞ্চলিক দলগুলির। বাংলার পাশাপাশি বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, দিল্লি, পঞ্জাব, ফলাফল অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করবেন এই আঞ্চলিক দলগুলি।