০৪ জুন ২০২৫, বুধবার, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বধূ নির্যাতন মামলায় তড়িঘড়ি গ্রেপ্তারি নয়, ফৌজদারি এজলাস ও পুলিশকে নির্দেশিকা কলকাতা হাইকোর্টের

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৯ অগাস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 17

পারিজাত মোল্লা: বধূ নির্যাতন সংক্রান্ত মামলায় সাধারণত অভিযুক্ত স্বামী এবং তাঁর পরিবারবর্গ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইনীভাবে সন্ত্রস্ত থাকতো। এই ধারার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠতো বেশি। তবে সবক্ষেত্রে নয়। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্টের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে চলতি সপ্তাহে। এই নির্দেশিকা কার্যকর করতে রাজ্যের সমস্ত নিম্ন আদালতের ফৌজদারি এজলাস গুলিকে পাঠানো হয়েছে। বধূ নির্যাতনের মামলায় এবার আর সরাসরি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। এর জন্য সঠিক তদন্ত এবং অনুমতি প্রয়োজন।

 

আরও পড়ুন: সোমবার থেকে খুলছে স্কুল-মাদ্রাসা-কলেজ

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের সমস্ত ফৌজদারি আদালতের উদ্দেশে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৯৮এ অর্থাৎ বধূ নির্যাতনের অভিযোগের ভিত্তিতে সরাসরি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যাবে না। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হলে অনুমতি থাকতে হবে। গত সোমবার এক নির্দেশিকায় এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সব ফৌজদারি আদালতকে সতর্ক করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: হাওড়ায় রামনবমী পালনে আয়োজকদের ‘কড়া শর্তাবলি’ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

 

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন বিচারপতি Joymalya Bagchi

গত সোমবার নির্দেশিকা জারি করলেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল চৈতালি চট্টোপাধ্যায়। এনিয়ে রাজ্য সরকারকেও নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। এই মর্মে সব থানা এবং পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীদের এই নির্দেশিকা সম্পর্কে অবগত করতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামানের সকল ফৌজদারি আদালতের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৪৯৮এ ধারায় মামলা হলেই যেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা না হয়। এই বিষয়টি নিশ্চিত করবেন ম্যাজিস্ট্রেট।

 

এমনকী পুলিশও সবদিক তদন্ত না করে, যেন গ্রেফতার না করে তা নির্দেশে বলা হয়েছে। ৪৯৮এ ধারায় অভিযোগ এলে পুলিশকে আগে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। সেই মতো গ্রেফতারির প্রয়োজনীতা রয়েছে কি না? তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে। কোন ক্ষেত্রে এবং কেন গ্রেফতার? সেই সংক্রান্ত একটি চেক লিস্ট থাকতে হবে পুলিশের কাছে। গ্রেফতারের বিষয়ে যথেষ্ট কারণ উল্লেখ করে পুলিশকে ধৃতের সঙ্গে ওই চেক লিস্ট বা মাপকাঠি পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলার সিজেএম-এর কাছে। বিচারক সেই চেকলিস্ট খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন ধৃতের হেফাজতে থাকার বিষয়টি। এর পাশাপাশি যদি গ্রেফতার না করা হয়। তাঁর কারণ উল্লেখ করে পুলিশকে অভিযোগের দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পাঠাতে হবে পুলিশ সুপারের কাছে। তার আগে অভিযুক্তকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে তদন্তকারীদের। সেই জিজ্ঞাসাবাদের উপর ভিত্তি করেই পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট যাবে।

 

কলকাতা হাইকোর্ট সতর্ক করে দিয়েছে যে, এই নির্দেশের অন্যথা হলে পুলিশকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৯৮এ সংক্রান্ত একটি মামলায় গত ৩১ জুলাই, সুপ্রিম কোর্ট একটি নির্দেশ জারি করেন। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামানের সকল ফৌজদারি আদালতের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশিকার জারি করেছেন।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বধূ নির্যাতন মামলায় তড়িঘড়ি গ্রেপ্তারি নয়, ফৌজদারি এজলাস ও পুলিশকে নির্দেশিকা কলকাতা হাইকোর্টের

আপডেট : ২৯ অগাস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার

পারিজাত মোল্লা: বধূ নির্যাতন সংক্রান্ত মামলায় সাধারণত অভিযুক্ত স্বামী এবং তাঁর পরিবারবর্গ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইনীভাবে সন্ত্রস্ত থাকতো। এই ধারার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠতো বেশি। তবে সবক্ষেত্রে নয়। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্টের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে চলতি সপ্তাহে। এই নির্দেশিকা কার্যকর করতে রাজ্যের সমস্ত নিম্ন আদালতের ফৌজদারি এজলাস গুলিকে পাঠানো হয়েছে। বধূ নির্যাতনের মামলায় এবার আর সরাসরি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। এর জন্য সঠিক তদন্ত এবং অনুমতি প্রয়োজন।

 

আরও পড়ুন: সোমবার থেকে খুলছে স্কুল-মাদ্রাসা-কলেজ

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের সমস্ত ফৌজদারি আদালতের উদ্দেশে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৯৮এ অর্থাৎ বধূ নির্যাতনের অভিযোগের ভিত্তিতে সরাসরি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যাবে না। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হলে অনুমতি থাকতে হবে। গত সোমবার এক নির্দেশিকায় এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সব ফৌজদারি আদালতকে সতর্ক করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: হাওড়ায় রামনবমী পালনে আয়োজকদের ‘কড়া শর্তাবলি’ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

 

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন বিচারপতি Joymalya Bagchi

গত সোমবার নির্দেশিকা জারি করলেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল চৈতালি চট্টোপাধ্যায়। এনিয়ে রাজ্য সরকারকেও নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। এই মর্মে সব থানা এবং পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীদের এই নির্দেশিকা সম্পর্কে অবগত করতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামানের সকল ফৌজদারি আদালতের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৪৯৮এ ধারায় মামলা হলেই যেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা না হয়। এই বিষয়টি নিশ্চিত করবেন ম্যাজিস্ট্রেট।

 

এমনকী পুলিশও সবদিক তদন্ত না করে, যেন গ্রেফতার না করে তা নির্দেশে বলা হয়েছে। ৪৯৮এ ধারায় অভিযোগ এলে পুলিশকে আগে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। সেই মতো গ্রেফতারির প্রয়োজনীতা রয়েছে কি না? তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে। কোন ক্ষেত্রে এবং কেন গ্রেফতার? সেই সংক্রান্ত একটি চেক লিস্ট থাকতে হবে পুলিশের কাছে। গ্রেফতারের বিষয়ে যথেষ্ট কারণ উল্লেখ করে পুলিশকে ধৃতের সঙ্গে ওই চেক লিস্ট বা মাপকাঠি পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলার সিজেএম-এর কাছে। বিচারক সেই চেকলিস্ট খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন ধৃতের হেফাজতে থাকার বিষয়টি। এর পাশাপাশি যদি গ্রেফতার না করা হয়। তাঁর কারণ উল্লেখ করে পুলিশকে অভিযোগের দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পাঠাতে হবে পুলিশ সুপারের কাছে। তার আগে অভিযুক্তকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে তদন্তকারীদের। সেই জিজ্ঞাসাবাদের উপর ভিত্তি করেই পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট যাবে।

 

কলকাতা হাইকোর্ট সতর্ক করে দিয়েছে যে, এই নির্দেশের অন্যথা হলে পুলিশকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৯৮এ সংক্রান্ত একটি মামলায় গত ৩১ জুলাই, সুপ্রিম কোর্ট একটি নির্দেশ জারি করেন। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামানের সকল ফৌজদারি আদালতের উদ্দেশ্যে এই নির্দেশিকার জারি করেছেন।