বিহারের রোহতাসে কংগ্রেস ও আরজেডিকে নিশানা মোদির, তফশিলি এবং তফশিলি উপজাতিদের প্রতারণার অভিযোগ

- আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার
- / 59
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার বাংলার আলিপুরদুয়ারে জনসভা করার পর শুক্রবার বিহারের রোহতাস জেলার কারাকাটে জনসভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জনসভা থেকে কংগ্রেস এবং আরজেডিকে একযোগ নিশানা করেন মোদি।
সামাজিক ন্যায়বিচারের আড়ালে তফশিলি, তফশিলি উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। গরিবদের শোষণ করার পরও আবার ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় কংগ্রেস-আরজেডি মরিয়া বলে সরব হন মোদি। তিনি বলেন, “কংগ্রেস এবং আরজেডির নেতারা সামাজিক ন্যায়বিচারের আড়ালে তফশিলি, তফশিলি উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আজকের গরিবদের দুর্দশার জন্য তারাই দায়ী। এই দলগুলির নেতারা আবার ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছেন”।
রোহতাস জেলার কারাকাট থেকে আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদব এবং তাঁর পরিবারকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। লালু প্রসাদ ও তাঁর পরিবারের শাসনকালে বিহারে ব্যাপক দুর্নীতি হয় এবং সাধারণ মানুষের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন আরজেডি সুপ্রিমো লালু। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে চাকরি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। জমির বিনিময়ে রেলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। শুধু লালু প্রসাদ নয়, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং পুত্র তেজপ্রতাপকেও তলব করেছিল ইডি। সেই নিয়ে এদিন খোঁচা দেন প্রধানমন্ত্রী।
আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদকে তুলোধনা করে মোদি বলেন, “বিহারে আরজেডি শাসনকালে তিনি এবং তাঁর পরিবার গরিবদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নিয়েছিলেন। তাঁরা কখনও গরিবদের উন্নতির কথা ভাবেননি।” লালু প্রসাদের মুখ্যমন্ত্রীর সময় বিজেপি জঙ্গলরাজ ছিল বলে নিশানা করেন মোদি। নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বিহারের সামগ্রিক উন্নতি হয়েছে।বিকশিত বিহার ছাড়া বিকশিত ভারতের কথা কল্পনাও করা যায় না বলে এদিন জনসভা থেকে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলায় অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের জয়গাঁথা বলার পর এদিন বিহার থেকেও অপারেশন সিন্দুরের সাফল্য নিয়ে মন্তব্য করেন মোদি। ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্তের ওপারে জঙ্গিদের ঘাঁটি ধ্বংস করেছে বলে জানান। ভারতীয় সেনাদের প্রতি স্যালুটও জানান তিনি। “অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের জন্য আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে স্যালুট জানাই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই অব্যাহত থাকবে। পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলোকে আমাদের বাহিনী আক্রমণ করেছে। তারা কখনও কল্পনাও করেনি যে ভারত এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে,” বলে জানান মোদি।
সেইসঙ্গে বিহারের যুবসমাজেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদি। ভারতীয় সেনা বাহিনীতে বিহারের যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তিনি বলেন “আমি বিএসএফ সাব-ইন্সপেক্টর মুহাম্মদ ইমতিয়াজকেও স্যালুট জানাই। যিনি জম্মু ও কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমান্তে পাকিস্তানি গোলা-গুলিতে নিহত হন।”
চলতি বছরে নভেম্বরে বিহারের নির্বাচন। ২৪৩টি আসনে ভোট। কংগ্রেস এবং আরজেডি জোটবদ্ধভাবে লড়ার কথা। অন্যদিকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-এর জোটসঙ্গী পদ্ম শিবির। বিহারের ভোট মাথায় রেখে ঘন ঘন মোদি বিহার সফর করছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এমনকি পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার পর প্রথম সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয় সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন মোদি। জঙ্গি হামলার একদিন পরেই বিহার সফরে যান নরেন্দ্র মোদি। সে নিয়েও বিতর্ক দানা বাঁধে। শুক্রবার বিহারে ফের এসে মোদি ভোটের দামামা বাজিয়ে দিলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের।