২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এক্সিট পোলে কর্নাটকে বিজেপি কংগ্রেসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস, কেউ কেউ বলছে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১১ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার
  • / 21

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বুধবার দক্ষিণের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য কর্নাটকে বহু চর্চিত বিধানসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে। সেখানে কে সরকার গড়বে কংগ্রেস নাকি বিজেপি, অথবা ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে বিধানসভা। সে ক্ষেত্রে কিং মেকারের ভূমিকায় ফের একবার অবতীর্ন হতে পারে জনতা দল (এস)।

এর উত্তর জানার জন্য আমাদের ১৩ মে অর্থাৎ আগামী শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে যেদিন ভোটের গণনা শুরু হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ‘বিশেষজ্ঞ’ সংস্থাগুলির সঙ্গে মিলে বুথ ফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোল প্রকাশ করেছে। তা নিয়ে আলোচনার আগে দেখা যাক দুই যুযুধান পক্ষ কংগ্রেস এবং বিজেপি ভোটপ্রচারে কী ধরনের হাওয়া তুলেছে। বিজেপির হয়ে প্রচারে আসরে নেমেছিলেন দলের স্থানীয় নেতা তো বটেই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও। শেষের কয়েকদিন দলের পক্ষে প্রচার করে গেলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু শেষ প্রচারে আদর্শ নির্বাচনবিধিকে উড়িয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী ধর্মের নামে ভোট চাইলেন মানুষের কাছে। গেরুয়া দল পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য স্বত্তাবিরোধী হাওয়াকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিল সাম্প্রদায়িক প্রচার এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ক্যারিশমা ব্যবহার করে।

আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক হিংসার পর কড়া পুলিশ, মেরুকরণের তাশ বিজেপির

অপরদিকে এবার ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী কংগ্রেস প্রচার জোর দিয়েছে কর্নাটকের বিজেপি সরকারের দুর্নীতি (৪০ পার্সেন্টের সরকার), আর্থিক এবং মানুষের রুটিরুজি এবং মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার উপর। কর্নাটক এমনিতেই দক্ষিণের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। কিন্তু কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনকে ২০২৩ সালে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচন। বলা হচ্ছে কর্নাটক বিধানসভার ফলাফল ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের পটভূমি তৈরি করে দেবে।

আরও পড়ুন: ঘৃণা ভাষণ রুখতে আইনের ভাবনা সিদ্দারামাইয়ার

এ হেন নির্বাচনের ফলাফলের যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে সেটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের। অন্তত বেশিরভাগ এক্সিট পোলে সেইরকমই দেখানো হয়েছে। তবে বেশিরভাগ এক্সিট পোলে বিজেপির তুলনায় কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখা হয়েছে কংগ্রেসকে।

আরও পড়ুন: জলমগ্ন মুম্বই-বিপর্যস্ত জনজীবন, রেড অ্যালার্ট জারি কর্ণাটকে

তবে ইন্ডিয়া টুডে—অ্যাক্সিস মাই পোলের এক্সিট পোলে  পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। ২২৪ সদস্যবিশিষ্ট বিধানসভায় কংগ্রেসকে তারা দিয়েছে ১২২ থেকে ১৪০টি আসন এবং বিজেপিকে দেওয়ার হয়েছে ৬২ থেকে ৮০টি আসন। ২৫টি আসন দেওয়া হয়েছে জেডি (এস) কে। নিউজ ২৪ টুডেস চাণক্যের রিপোর্টেও কংগ্রেসকে ১২০টি আসন দেওয়া হয়েছে এবং বিজেপিকে ৯২টি আসন। ১২টি আসন গেছে জেডি (এস)-এর ঝুলিতে। এবিপি নিউজ সি ভোটার এক্সিট পোল কংগ্রেসকে দিয়েছে ১০০-১১২টি আসন, বিজেপিকে দিয়েছে ৮৩-৯৫টি আসন এবং জেডি (এস)-কে দিয়েছে ২১-২৯ আসন।

দ্য রিপাবলিক টিভি পি মার্ক-এর ভবিষ্যৎবাণী হল কংগ্রেস পাবে ৯৪-১০৮, বিজেপি পাবে ৮৫-১০০ এবং জেডি (এস) পেতে পারে ২০-২৪টি আসন। দ্য টিভি ৯ ভারতবর্ষ পোলস্টার্ট এর এক্সিট পোলে দেখানো হয়েছে কংগ্রেস পেতে পারে ৯৯-১০৯, বিজেপি ৮৮-৯৮ এবং জেডি (এস) ২১-২৬টি আসন। জি নিউজ ম্যাটরিজ জানিয়েছে কংগ্রেস পেতে পারে ১০৩-১১৮, বিজেপি ৭৯-৯৪ এবং জেডি (এস) ২৫-৩৩টি আসন। নিউজ নেশন সিজিএস পোল এবং সুবর্ণ নিউজ জন কি বাত এই দুই চ্যানেলে বিজেপি কংগ্রেসের চেয়ে এগিয়ে রাখা হয়েছে। প্রথম চ্যানেলটি বিজেপিকে দিয়েছে ১১৪টি আসন, কংগ্রেসকে ৮৬ এবং জেডি (এস) কে ২১টি আসন। দ্বিতীয় চ্যনেলটি বিজেপিকে দিয়েছে ৯৪-১১৭ এবং কংগ্রেসকে দিয়েছে ৯১-১০৬টি আসন। জেডি (এস) কে দেওয়া হয়েছে ১৪-২৪।

টাইমস নাউ ইটিজি এক্সিট পোলে কংগ্রেসকে দেওয়া হয়েছে ১১৩টি আসন এবং বিজেপিকে ৮৫টি আসন। জেডি (এস) কে দেওয়া হয়েছে ২৩টি আসন। ২০১৮ সালে বিজেপি ১০৪টি আসন পেয়ে একক ভাবে সবচেয়ে বড় পার্টি হয়েছিল। কিন্তু সরকার গঠন করতে পারেনি। কারণ কংগ্রেস (৮০টি আসন) এবং (জেডিএস) (৩৭টি আসন) জোট বেধে সরকার গড়েছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে কংগ্রেসের বহু বিধায়ককে কংগ্রেস থেকে ভেঙে নিজের দলে শামিল করে নিয়ে কর্নাটকে ক্ষমতায় আসে বিজেপি এবং মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপি নেতা ইয়েদুরাপ্পা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কর্নাটকের ১৫টি আসনের মধ্যে জিতেছিল ১২টি বিজেপি। বিদায়ী বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা ছিল ১১৬, কংগ্রেসের ৬৯ এবং জেডিএস-এর ২৯ বিধায়ক।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এক্সিট পোলে কর্নাটকে বিজেপি কংগ্রেসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস, কেউ কেউ বলছে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা

আপডেট : ১১ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বুধবার দক্ষিণের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য কর্নাটকে বহু চর্চিত বিধানসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে। সেখানে কে সরকার গড়বে কংগ্রেস নাকি বিজেপি, অথবা ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে বিধানসভা। সে ক্ষেত্রে কিং মেকারের ভূমিকায় ফের একবার অবতীর্ন হতে পারে জনতা দল (এস)।

এর উত্তর জানার জন্য আমাদের ১৩ মে অর্থাৎ আগামী শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে যেদিন ভোটের গণনা শুরু হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ‘বিশেষজ্ঞ’ সংস্থাগুলির সঙ্গে মিলে বুথ ফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোল প্রকাশ করেছে। তা নিয়ে আলোচনার আগে দেখা যাক দুই যুযুধান পক্ষ কংগ্রেস এবং বিজেপি ভোটপ্রচারে কী ধরনের হাওয়া তুলেছে। বিজেপির হয়ে প্রচারে আসরে নেমেছিলেন দলের স্থানীয় নেতা তো বটেই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও। শেষের কয়েকদিন দলের পক্ষে প্রচার করে গেলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু শেষ প্রচারে আদর্শ নির্বাচনবিধিকে উড়িয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী ধর্মের নামে ভোট চাইলেন মানুষের কাছে। গেরুয়া দল পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য স্বত্তাবিরোধী হাওয়াকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিল সাম্প্রদায়িক প্রচার এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ক্যারিশমা ব্যবহার করে।

আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক হিংসার পর কড়া পুলিশ, মেরুকরণের তাশ বিজেপির

অপরদিকে এবার ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী কংগ্রেস প্রচার জোর দিয়েছে কর্নাটকের বিজেপি সরকারের দুর্নীতি (৪০ পার্সেন্টের সরকার), আর্থিক এবং মানুষের রুটিরুজি এবং মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার উপর। কর্নাটক এমনিতেই দক্ষিণের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। কিন্তু কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনকে ২০২৩ সালে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচন। বলা হচ্ছে কর্নাটক বিধানসভার ফলাফল ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের পটভূমি তৈরি করে দেবে।

আরও পড়ুন: ঘৃণা ভাষণ রুখতে আইনের ভাবনা সিদ্দারামাইয়ার

এ হেন নির্বাচনের ফলাফলের যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে সেটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের। অন্তত বেশিরভাগ এক্সিট পোলে সেইরকমই দেখানো হয়েছে। তবে বেশিরভাগ এক্সিট পোলে বিজেপির তুলনায় কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখা হয়েছে কংগ্রেসকে।

আরও পড়ুন: জলমগ্ন মুম্বই-বিপর্যস্ত জনজীবন, রেড অ্যালার্ট জারি কর্ণাটকে

তবে ইন্ডিয়া টুডে—অ্যাক্সিস মাই পোলের এক্সিট পোলে  পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। ২২৪ সদস্যবিশিষ্ট বিধানসভায় কংগ্রেসকে তারা দিয়েছে ১২২ থেকে ১৪০টি আসন এবং বিজেপিকে দেওয়ার হয়েছে ৬২ থেকে ৮০টি আসন। ২৫টি আসন দেওয়া হয়েছে জেডি (এস) কে। নিউজ ২৪ টুডেস চাণক্যের রিপোর্টেও কংগ্রেসকে ১২০টি আসন দেওয়া হয়েছে এবং বিজেপিকে ৯২টি আসন। ১২টি আসন গেছে জেডি (এস)-এর ঝুলিতে। এবিপি নিউজ সি ভোটার এক্সিট পোল কংগ্রেসকে দিয়েছে ১০০-১১২টি আসন, বিজেপিকে দিয়েছে ৮৩-৯৫টি আসন এবং জেডি (এস)-কে দিয়েছে ২১-২৯ আসন।

দ্য রিপাবলিক টিভি পি মার্ক-এর ভবিষ্যৎবাণী হল কংগ্রেস পাবে ৯৪-১০৮, বিজেপি পাবে ৮৫-১০০ এবং জেডি (এস) পেতে পারে ২০-২৪টি আসন। দ্য টিভি ৯ ভারতবর্ষ পোলস্টার্ট এর এক্সিট পোলে দেখানো হয়েছে কংগ্রেস পেতে পারে ৯৯-১০৯, বিজেপি ৮৮-৯৮ এবং জেডি (এস) ২১-২৬টি আসন। জি নিউজ ম্যাটরিজ জানিয়েছে কংগ্রেস পেতে পারে ১০৩-১১৮, বিজেপি ৭৯-৯৪ এবং জেডি (এস) ২৫-৩৩টি আসন। নিউজ নেশন সিজিএস পোল এবং সুবর্ণ নিউজ জন কি বাত এই দুই চ্যানেলে বিজেপি কংগ্রেসের চেয়ে এগিয়ে রাখা হয়েছে। প্রথম চ্যানেলটি বিজেপিকে দিয়েছে ১১৪টি আসন, কংগ্রেসকে ৮৬ এবং জেডি (এস) কে ২১টি আসন। দ্বিতীয় চ্যনেলটি বিজেপিকে দিয়েছে ৯৪-১১৭ এবং কংগ্রেসকে দিয়েছে ৯১-১০৬টি আসন। জেডি (এস) কে দেওয়া হয়েছে ১৪-২৪।

টাইমস নাউ ইটিজি এক্সিট পোলে কংগ্রেসকে দেওয়া হয়েছে ১১৩টি আসন এবং বিজেপিকে ৮৫টি আসন। জেডি (এস) কে দেওয়া হয়েছে ২৩টি আসন। ২০১৮ সালে বিজেপি ১০৪টি আসন পেয়ে একক ভাবে সবচেয়ে বড় পার্টি হয়েছিল। কিন্তু সরকার গঠন করতে পারেনি। কারণ কংগ্রেস (৮০টি আসন) এবং (জেডিএস) (৩৭টি আসন) জোট বেধে সরকার গড়েছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে কংগ্রেসের বহু বিধায়ককে কংগ্রেস থেকে ভেঙে নিজের দলে শামিল করে নিয়ে কর্নাটকে ক্ষমতায় আসে বিজেপি এবং মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপি নেতা ইয়েদুরাপ্পা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কর্নাটকের ১৫টি আসনের মধ্যে জিতেছিল ১২টি বিজেপি। বিদায়ী বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা ছিল ১১৬, কংগ্রেসের ৬৯ এবং জেডিএস-এর ২৯ বিধায়ক।