২৫ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জ্বালানি অবরোধে গাজায় তীব্র জলসংকট: রাষ্ট্রসংঘ

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার
  • / 18

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ফিলিস্তিনিতে ইসরাইলি হামলা নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ ইউনিসেফের। সম্প্রতি জেনেভায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে  উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার। বিগত বহু বছর ধরেই গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গত ১৮ বছর ধরে গাজার ওপর অবৈধ অবরোধ চালাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। গত কয়েকদিন ধরে গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলিতেও হামলার খবর আসছে।

এদিন ইউনিসেফ জানায়, “গাজায় যদি এই ১০০ দিনের জ্বালানি অবরোধ চলতে থাকে তাহলে পিপাসায় প্রাণ হারাবে শিশুরা”। গাজায় বাস করা ২০ লাখের বেশি মানুষের জন্য জ্বালানি ছাড়া জল উৎপাদন, বিশুদ্ধিকরণ ও সরবরাহ অসম্ভব। ইউনিসেফ জানিয়েছে এপ্রিলের তুলনায় অপুষ্টিতে ভুগে শিশুদের মৃত্যুর হার বেড়ে হয়েছে ৫০ শতাংশ। জল সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকায় এই সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠছে বলে খবর।

আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে গাজাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, উঠল দাবি

এদিন ইউএন-ওকা জানিয়েছে, গাজা সংঘাতে এখনও প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। এরই মধ্যে ইসরাইলের নির্দিষ্ট রুটে ত্রাণ সংগ্রহের সময় গুলির হামলার মুখে পড়ছে সাধারণ মানুষ। ইউএন-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও চলছে ইসরাইলের হামলা। ইউএন-ওকার স্পষ্ট দাবি, “ইসরাইলকে জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি দিতে হবে। তা যেন যথেষ্ট পরিমাণে হয় এবং গাজার উত্তরের দিকেও পৌঁছোয়। জ্বালানি না এলে জীবন রক্ষাকারী পরিষেবাগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। এতে আরও মানুষ মারা পড়বে।”

আরও পড়ুন: জলবিহীন গাজা: শিশুদের সামনে মৃত্যুর হুমকি 

সূত্রের খবর, রাফায় মজুত ছিল সামান্য জ্বালানি। আপাতত সেটি গাজার দক্ষিণদিকে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে নতুন করে জ্বালানি না ঢুকলে, সমস্ত জরুরি পরিষেবা দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে বলে খবর। সোমবার রাফা থেকে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য ইউএন-ওকার একটি অভিযান সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলে সরাসরি আঘাত হানল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র, তেল আবিবে বিস্ফোরণ ও ধ্বংসের খবর

এছাড়াও ইউএন-ওকা বলছে, “খাদ্যের অভাব ও জটিল পরিস্থিতির ফলে শিশুদের মধ্যে মানসিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে”। গত সপ্তাহে গাজা সিটি, দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসের শরণার্থী শিবিরে পৌঁছোন তাঁরা। সেখানে হাজারের বেশি শিশুকে মানসিক সাহায়তা দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে হু জানিয়েছে, গাজা জুড়ে তাঁদের প্রশিক্ষিত কর্মীরা “সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড” দিচ্ছেন।

এরই মধ্যে ইসরাইলের তরফ থেকে সেনাবাহিনীর স্থানান্তরের নির্দেশ এসেছে। উত্তরের জাবালিয়া এলাকায় সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে ইউএন-ওকা জানিয়েছে,  গাজার ত্রাণশিবিরে কোনও নতুন জিনিসপত্র ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরাইল। অনেক পুরনো শিবিরও মেরামতের জন্য অযোগ্য।  খান ইউনুসে ত্রাণশিবিরে আসা অনেকে কাঠের প্লেট দিয়ে অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করার চেষ্টা করেছে বলে খবর। সহযোগী কিছু সংস্থা গাজায় ১৪টি মানবিক অভিযানের পরিকল্পনা করে। যার মধ্যে ৬টি বাতিল করা হয়।  ইউএন-ওকার মতে এগুলি জ্বালানি ও জল পরিবহণ, মৃতদেহ উদ্ধারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।

তবে স্বাস্থ্য, খাদ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে ইউএন কিছুটা কার্যকারী ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়েছে। এই মুহূর্তে গাজার অবস্থা ভয়াবহ। জ্বালানি, খাদ্য, আশ্রয়, নিরাপত্তা, মানবিক ও মানসিক সংকটে জর্জরিত গাজা দাবি রাষ্ট্রসংঘের। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে গাজায় গণহারে মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘ।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জ্বালানি অবরোধে গাজায় তীব্র জলসংকট: রাষ্ট্রসংঘ

আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ফিলিস্তিনিতে ইসরাইলি হামলা নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ ইউনিসেফের। সম্প্রতি জেনেভায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে  উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার। বিগত বহু বছর ধরেই গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গত ১৮ বছর ধরে গাজার ওপর অবৈধ অবরোধ চালাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। গত কয়েকদিন ধরে গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলিতেও হামলার খবর আসছে।

এদিন ইউনিসেফ জানায়, “গাজায় যদি এই ১০০ দিনের জ্বালানি অবরোধ চলতে থাকে তাহলে পিপাসায় প্রাণ হারাবে শিশুরা”। গাজায় বাস করা ২০ লাখের বেশি মানুষের জন্য জ্বালানি ছাড়া জল উৎপাদন, বিশুদ্ধিকরণ ও সরবরাহ অসম্ভব। ইউনিসেফ জানিয়েছে এপ্রিলের তুলনায় অপুষ্টিতে ভুগে শিশুদের মৃত্যুর হার বেড়ে হয়েছে ৫০ শতাংশ। জল সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকায় এই সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠছে বলে খবর।

আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে গাজাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, উঠল দাবি

এদিন ইউএন-ওকা জানিয়েছে, গাজা সংঘাতে এখনও প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। এরই মধ্যে ইসরাইলের নির্দিষ্ট রুটে ত্রাণ সংগ্রহের সময় গুলির হামলার মুখে পড়ছে সাধারণ মানুষ। ইউএন-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও চলছে ইসরাইলের হামলা। ইউএন-ওকার স্পষ্ট দাবি, “ইসরাইলকে জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি দিতে হবে। তা যেন যথেষ্ট পরিমাণে হয় এবং গাজার উত্তরের দিকেও পৌঁছোয়। জ্বালানি না এলে জীবন রক্ষাকারী পরিষেবাগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। এতে আরও মানুষ মারা পড়বে।”

আরও পড়ুন: জলবিহীন গাজা: শিশুদের সামনে মৃত্যুর হুমকি 

সূত্রের খবর, রাফায় মজুত ছিল সামান্য জ্বালানি। আপাতত সেটি গাজার দক্ষিণদিকে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে নতুন করে জ্বালানি না ঢুকলে, সমস্ত জরুরি পরিষেবা দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে বলে খবর। সোমবার রাফা থেকে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য ইউএন-ওকার একটি অভিযান সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: ইসরাইলে সরাসরি আঘাত হানল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র, তেল আবিবে বিস্ফোরণ ও ধ্বংসের খবর

এছাড়াও ইউএন-ওকা বলছে, “খাদ্যের অভাব ও জটিল পরিস্থিতির ফলে শিশুদের মধ্যে মানসিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে”। গত সপ্তাহে গাজা সিটি, দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসের শরণার্থী শিবিরে পৌঁছোন তাঁরা। সেখানে হাজারের বেশি শিশুকে মানসিক সাহায়তা দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে হু জানিয়েছে, গাজা জুড়ে তাঁদের প্রশিক্ষিত কর্মীরা “সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড” দিচ্ছেন।

এরই মধ্যে ইসরাইলের তরফ থেকে সেনাবাহিনীর স্থানান্তরের নির্দেশ এসেছে। উত্তরের জাবালিয়া এলাকায় সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে ইউএন-ওকা জানিয়েছে,  গাজার ত্রাণশিবিরে কোনও নতুন জিনিসপত্র ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরাইল। অনেক পুরনো শিবিরও মেরামতের জন্য অযোগ্য।  খান ইউনুসে ত্রাণশিবিরে আসা অনেকে কাঠের প্লেট দিয়ে অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করার চেষ্টা করেছে বলে খবর। সহযোগী কিছু সংস্থা গাজায় ১৪টি মানবিক অভিযানের পরিকল্পনা করে। যার মধ্যে ৬টি বাতিল করা হয়।  ইউএন-ওকার মতে এগুলি জ্বালানি ও জল পরিবহণ, মৃতদেহ উদ্ধারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।

তবে স্বাস্থ্য, খাদ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে ইউএন কিছুটা কার্যকারী ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়েছে। এই মুহূর্তে গাজার অবস্থা ভয়াবহ। জ্বালানি, খাদ্য, আশ্রয়, নিরাপত্তা, মানবিক ও মানসিক সংকটে জর্জরিত গাজা দাবি রাষ্ট্রসংঘের। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে গাজায় গণহারে মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘ।