০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেআইনী নির্মাণ নিয়ে বিচারপতি সিনহার এজলাসে পুরসভা-পুলিশের বিবাদ

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার
  • / 39

মোল্লা জসিমউদ্দিন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে রাজ্যের দুই বিভাগের কোন্দল প্রকাশ্যে এলো। একটি বেআইনি নির্মাণকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টের ভরা এজলাসে বিবাদে জড়াল পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশের কর্মীদের একাংশ। বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পুরসভাকে অসহযোগিতার অভিযোগে নারকেলডাঙ্গা থানার ওসিকে সশরীরে এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ওসির হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল।

 

আরও পড়ুন: বেআইনী নির্মাণ নিয়ে কড়া হাইকোর্ট, প্রমোটারের জরিমানা দ্বিগুণ করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা

অভিযোগ, বিচারপতি গত বৃহস্পতিবার ওসিকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশের পরই পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রকে থানায় ডেকে ওসি নাকি শাসিয়ে ছিলেন? এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে এই অভিযোগকে ঘিরে বিচারপতির উপস্থিতিতে এজলাসে বচসায় জড়িয়ে পড়ে কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশের কর্মীদের একাংশ। রাজ্যের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট থানার ওসির হয়ে বলেন, ‘ওই বেআইনি নির্মাণটি আগেই খালি করে দেওয়া হয়েছে। নির্মাণের ভেতরের অংশ ভাঙার কাজ করা হয়েছে গত জানুয়ারি মাসে। তাও দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুরসভা পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করছে।’

আরও পড়ুন: তদন্তে অগ্রগতি নেই,  ইডির আধিকারিক’কে সরালেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা

 

আরও পড়ুন: ২৭ সেপ্টেম্বর রানীনগরে বোর্ড গঠনের নির্দেশ, কংগ্রেস সভাপতিকে জেল থেকে বের করতে বলল হাইকোর্টের

পুরসভার আইনজীবী পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘পুলিশ নিজেই হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে এই কাজ করতে থানা সক্ষম নয়। শুধু তাই নয় আদালত ওসিকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়ার পরই পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল।’এরপরই বিচারপতি ওই সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রকে ডেকে পাঠান। বিচারপতি তাঁর কাছে জানতে চান, ‘আপনাকে কি থানায় ডেকে শাসানো হয়েছে?’ উত্তরে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র বলেন, ‘আমাকে থানায় ডেকে বলা হয়েছে রমজান মাস চলছে এবং ভোট এসে গেছে তাই ওই বাড়ি ভাঙতে ফোর্স দেওয়া যাবে না।’ বিচারপতি তখন বলেন, ‘আপনাকে কি লিখিতভাবে কিছু জানানো হয়েছে?’ ওই ইঞ্জিনিয়ার তখন বলেন, ‘শুধু মৌখিকভাবে বলা হয়েছে।’ এরপরই এজলাসে পুলিশ এবং পুরসভার কর্মীদের একাংশ বচসায় জড়িয়ে পড়েন।

 

আদালত সূত্রে প্রকাশ, কলকাতা পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে নারকেল ডাঙা থানা এলাকার ৩ডি/এইচ/৭ এম এন চ্যাটার্জি সরনিতে কোনও অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছে আস্ত একটি ছয় তলা বিল্ডিং। রাতারাতি ওই নির্মাণে বসতিও গড়ে উঠেছে। বিষয়টি নজরে আসার পর ওই বিল্ডিং ভাঙার কাজ শুরু করতে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করে পুরসভা।

 

অভিযোগ, চেষ্টা করলেও ওই বিল্ডিংটি খালি করা যায়নি। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। সেই মামলায় নারকেলডাঙা থানার পুলিশকে অবিলম্বে ওই বিল্ডিংটিকে খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে পুরসভার তরফে জানানো হয়, ‘পুলিশ কোনওরকম সাহায্য করছে না তাই ওই বেআইনি নির্মাণটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না’। ওই মামলাতেই এদিন ওসিকে তলব করেন বিচারপতি। তারপর এজলাসে পুলিশের বক্তব্য রাখার পর পুরসভার আইনজীবী সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের গত চব্বিশ ঘন্টার ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরলে বিবাদের সুত্রপাত ঘটে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বেআইনী নির্মাণ নিয়ে বিচারপতি সিনহার এজলাসে পুরসভা-পুলিশের বিবাদ

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে রাজ্যের দুই বিভাগের কোন্দল প্রকাশ্যে এলো। একটি বেআইনি নির্মাণকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টের ভরা এজলাসে বিবাদে জড়াল পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশের কর্মীদের একাংশ। বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পুরসভাকে অসহযোগিতার অভিযোগে নারকেলডাঙ্গা থানার ওসিকে সশরীরে এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ওসির হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল।

 

আরও পড়ুন: বেআইনী নির্মাণ নিয়ে কড়া হাইকোর্ট, প্রমোটারের জরিমানা দ্বিগুণ করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা

অভিযোগ, বিচারপতি গত বৃহস্পতিবার ওসিকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশের পরই পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রকে থানায় ডেকে ওসি নাকি শাসিয়ে ছিলেন? এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে এই অভিযোগকে ঘিরে বিচারপতির উপস্থিতিতে এজলাসে বচসায় জড়িয়ে পড়ে কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশের কর্মীদের একাংশ। রাজ্যের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট থানার ওসির হয়ে বলেন, ‘ওই বেআইনি নির্মাণটি আগেই খালি করে দেওয়া হয়েছে। নির্মাণের ভেতরের অংশ ভাঙার কাজ করা হয়েছে গত জানুয়ারি মাসে। তাও দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুরসভা পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করছে।’

আরও পড়ুন: তদন্তে অগ্রগতি নেই,  ইডির আধিকারিক’কে সরালেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা

 

আরও পড়ুন: ২৭ সেপ্টেম্বর রানীনগরে বোর্ড গঠনের নির্দেশ, কংগ্রেস সভাপতিকে জেল থেকে বের করতে বলল হাইকোর্টের

পুরসভার আইনজীবী পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘পুলিশ নিজেই হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে এই কাজ করতে থানা সক্ষম নয়। শুধু তাই নয় আদালত ওসিকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়ার পরই পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল।’এরপরই বিচারপতি ওই সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রকে ডেকে পাঠান। বিচারপতি তাঁর কাছে জানতে চান, ‘আপনাকে কি থানায় ডেকে শাসানো হয়েছে?’ উত্তরে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র বলেন, ‘আমাকে থানায় ডেকে বলা হয়েছে রমজান মাস চলছে এবং ভোট এসে গেছে তাই ওই বাড়ি ভাঙতে ফোর্স দেওয়া যাবে না।’ বিচারপতি তখন বলেন, ‘আপনাকে কি লিখিতভাবে কিছু জানানো হয়েছে?’ ওই ইঞ্জিনিয়ার তখন বলেন, ‘শুধু মৌখিকভাবে বলা হয়েছে।’ এরপরই এজলাসে পুলিশ এবং পুরসভার কর্মীদের একাংশ বচসায় জড়িয়ে পড়েন।

 

আদালত সূত্রে প্রকাশ, কলকাতা পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে নারকেল ডাঙা থানা এলাকার ৩ডি/এইচ/৭ এম এন চ্যাটার্জি সরনিতে কোনও অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছে আস্ত একটি ছয় তলা বিল্ডিং। রাতারাতি ওই নির্মাণে বসতিও গড়ে উঠেছে। বিষয়টি নজরে আসার পর ওই বিল্ডিং ভাঙার কাজ শুরু করতে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করে পুরসভা।

 

অভিযোগ, চেষ্টা করলেও ওই বিল্ডিংটি খালি করা যায়নি। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। সেই মামলায় নারকেলডাঙা থানার পুলিশকে অবিলম্বে ওই বিল্ডিংটিকে খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে পুরসভার তরফে জানানো হয়, ‘পুলিশ কোনওরকম সাহায্য করছে না তাই ওই বেআইনি নির্মাণটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না’। ওই মামলাতেই এদিন ওসিকে তলব করেন বিচারপতি। তারপর এজলাসে পুলিশের বক্তব্য রাখার পর পুরসভার আইনজীবী সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের গত চব্বিশ ঘন্টার ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরলে বিবাদের সুত্রপাত ঘটে।