পৌষমেলা কি বন্ধ থাকবে এবছর! কি বলছে বিশ্বভারতী

- আপডেট : ১ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার
- / 30
দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট রাজি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপরে ঝুলে রইল পৌষমেলা। পৌষমেলা নিয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলেও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চুপ। তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করায় পৌষমেলা কিছুটা দোলাচলে।
১২৬ বছরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা করবার আবেদন জানিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে দুটি পৃথক চিঠি দিয়েছিল বোলপুর পুরসভা। যদিও তার আগেই শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে পৌষমেলা করবার প্রস্তুতি শুরু করবার আবেদন জানিয়েছিল বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি এবং স্থানীয় শিল্পীরা।
বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে পাঠানো চিঠিতে পুর প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপারসন পর্ণা ঘোষ লেখেন ‘আমাদের এই অনুরোধ যে আমরা বোলপুরবাসী ও পুরসভা শান্তিনিতেন ট্রাস্টের নিয়ম ও নির্দেশ অনুযায়ী মেলার একশো-পচিশ বর্ষের সমাপ্তি উৎসবটি করতে চাই। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট যেভাবে কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে মেলার মাঠ ব্যবহার করেন, আমরাও সেই অর্থ দিতে প্রস্তুত। মেলার পরিচ্ছন্নতা, সুরক্ষা ইত্যাদির দায়িত্ব আমাদের। গ্রীন ট্রাইবুনালের সব নির্দেশ পালন করা হবে। আমরা ছয় দিন মেলার পর মাঠ ফেরৎ দেব।

এই মেলা কোভিডবিধি অনুসরণ করেই হবে। আপামর বাঙালির এই মেলার প্রতি অনুরাগ মনে রেখে আপনি আমাদের এই মেলার জন্য ভাড়ার বিনিময়ে মাঠ ব্যবহারে অনুমতি দিয়ে বাধিত করুন। আমরা ট্রাস্টের সঙ্গেই এই মেলা করতে চাই যাতে মেলার ঐতিহ্য বজায় থাকে।’
সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের পক্ষ থেকে এদিন বোলপুর পুরসভাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যে বোলপুর পুরসভার প্রস্তাব নীতিগতভাবে তারা সমর্থন করেন।
সম্প্রতি শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্যরা একটি বৈঠক করে রেজ্যুলুশন নেন। সেই রেজ্যুলশন কপি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বোলপুর পুরসভা, বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি এবং হস্তশিল্পীদের।
শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্য অনিল কোনার বলেন, ‘আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। যেহেতু বোলপুর পুরসভা, একটি সরকারি সংস্থা এবং তারা সব কিছু মেনে পৌষমেলা করবার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তাই তাদের এই প্রস্তাবকে আমরা নীতিগতভাবে সমর্থন করি। যেহেতু শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের মূল কাজ পৌষ উৎসব ও পৌষ মেলা সংগঠিত করা। করোনা পরিস্থিতি গতবছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ উৎসব পালন করেছেন, এবারও তারা সেটা করবেন। তাই বোলপুর পুরসভা যদি পৌষমেলা করতে চান তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেক্ষেত্রে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে পরিকাঠামো দিতে হবে, যেমন তারা আমাদের দেন। তবে যেহেতু বিশ্বভারতীর মাঠ, তাই তারা মাঠ দেবেন, কি দেবেন না – সেটা তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
এদিন পর্ণা দেবী জানান, “শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট তাদের নীতিগত আপত্তি নেই জানিয়ে আমাদের চিঠি দিয়েছেন। এখনও বিশ্বভারতীর তরফ থেকে কোন উত্তর আমরা পায় নি। যেহেতু মাঠ ও পরিকাঠামো তাদের, তাই তাদের উত্তরের অপেক্ষায় আমরা আছি। সময় আর বেশি নেই, আরও দু-চার দেখি, তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।’