২৯ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভেজাল মদ খেয়ে ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু: এক মর্মান্তিক নীরব গণহত্যা

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 33

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বর্তমান সময়ে সমাজ ধ্বংসের অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসে মাদকাসক্ত ও মদ্যপান। ১৯২০ এবং ১৯৩৩ এর মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত মদ্যপান এবং এর সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে অ্যালকোহলের উপর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তবে, এই সুচিন্তিত পদক্ষেপের ধ্বংসাত্মক পরিণতি দেখতে হয়েছিল দেশটিকে। অবৈধ সেবনকে নিরুৎসাহিত করার জন্য অ্যালকোহলকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষাক্ত করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা সম্প্রতি আমেরিকার ইতিহাসের এই কালো অধ্যায়কে তুলে ধরে একটি মর্মস্পর্শী গল্প প্রচার করেছেন। নিষিদ্ধের সময়ে বিষাক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে যে শহরগুলিতে মৃতদেহে উপচে পড়েছিল, তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। কীভাবে বিপথগামী নীতিগুলি ব্যাকফায়ার করতে পারে যখন আসক্তিকে সহানুভূতি এবং যত্ন সহকারে মোকাবেলা করা হয় না। এই ট্র্যাজেডি একটি মারাত্মক উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

তবে বর্তমানে মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও উদ্বেগজনক হারে মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রসমূহের (সিডিসি) মতে, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের কারণে কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বছরে ১ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। কোভিড-১৯ মহামারীর পরে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত দশকে অ্যালকোহল সম্পর্কিত মৃত্যুর ৭০% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মদ্যপান কেবল একটি খারাপ অভ্যাস নয়। এটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক এবং শারীরবৃত্তীয় প্রভাব সহ একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। সঠিক হস্তক্ষেপ না করলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, শারীরিক অসুস্থতা এবং অনেক ক্ষেত্রে অকাল মৃত্যু ঘটে। বিশ্বব্যাপী সরকার ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ক্রমবর্ধমান মহামারী মোকাবেলায় কেবল নিয়ন্ত্রণই নয়, পুনর্বাসন ও সচেতনতা কর্মসূচির দিকেও মনোনিবেশ করতে হবে।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভেজাল মদ খেয়ে ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু: এক মর্মান্তিক নীরব গণহত্যা

আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বর্তমান সময়ে সমাজ ধ্বংসের অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসে মাদকাসক্ত ও মদ্যপান। ১৯২০ এবং ১৯৩৩ এর মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত মদ্যপান এবং এর সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে অ্যালকোহলের উপর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তবে, এই সুচিন্তিত পদক্ষেপের ধ্বংসাত্মক পরিণতি দেখতে হয়েছিল দেশটিকে। অবৈধ সেবনকে নিরুৎসাহিত করার জন্য অ্যালকোহলকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষাক্ত করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা সম্প্রতি আমেরিকার ইতিহাসের এই কালো অধ্যায়কে তুলে ধরে একটি মর্মস্পর্শী গল্প প্রচার করেছেন। নিষিদ্ধের সময়ে বিষাক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে যে শহরগুলিতে মৃতদেহে উপচে পড়েছিল, তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। কীভাবে বিপথগামী নীতিগুলি ব্যাকফায়ার করতে পারে যখন আসক্তিকে সহানুভূতি এবং যত্ন সহকারে মোকাবেলা করা হয় না। এই ট্র্যাজেডি একটি মারাত্মক উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

তবে বর্তমানে মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও উদ্বেগজনক হারে মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রসমূহের (সিডিসি) মতে, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের কারণে কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বছরে ১ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। কোভিড-১৯ মহামারীর পরে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত দশকে অ্যালকোহল সম্পর্কিত মৃত্যুর ৭০% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মদ্যপান কেবল একটি খারাপ অভ্যাস নয়। এটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক এবং শারীরবৃত্তীয় প্রভাব সহ একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। সঠিক হস্তক্ষেপ না করলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, শারীরিক অসুস্থতা এবং অনেক ক্ষেত্রে অকাল মৃত্যু ঘটে। বিশ্বব্যাপী সরকার ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ক্রমবর্ধমান মহামারী মোকাবেলায় কেবল নিয়ন্ত্রণই নয়, পুনর্বাসন ও সচেতনতা কর্মসূচির দিকেও মনোনিবেশ করতে হবে।