০৪ জুন ২০২৫, বুধবার, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাতে হাত ধরে সংহতি মিছিলে পা মেলালেন ধর্মগুরুরা

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২২ জানুয়ারী ২০২৪, সোমবার
  • / 12

সংহতি মিছিল ( ছবি-খালিদুর রহিম)

পুবের কলম প্রতিবেদক: এই দেশ কোনও একটি নির্দিষ্ট ধর্মের নয়। এই দেশ সর্ব ধর্মের। সর্ব ধর্মের সমন্বয়ে তৈরি এই দেশ। প্রত্যেকটি ধর্মেরই সমান গুরুত্ব রয়েছে এই দেশে, এই রাজ্যে। অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন সংহতি মিছিল থেকে ফের একবার সেই সম্প্রীতির বার্তাই তুলে ধরলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে কালীঘাটে পূজা দিয়ে হাজরা পার্ক থেকে যাত্রা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। যাত্রা শেষ হয় পার্ক সার্কাস ময়দানে। পথে প্রথমে কালীঘাট, তারপর গরচা গুরুদ্বোয়ারা, বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে গির্জা ও শেষে পার্ক সার্কাসের মসজিদে প্রার্থনা করে পার্ক সার্কাস ময়দানে আসেন মমতা। পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে ধর্মগুরুদের পাশে নিয়ে ফের একবার রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে দিলেন সম্প্রীতির বার্তা। মনে করিয়ে দিলেন, ‘ধর্ম তোমার ধর্ম আমার, উৎসব সবার।’

'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার', মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাতে হাত ধরে সংহতি মিছিলে পা মেলালেন ধর্মগুরুরা

আরও পড়ুন: মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে সরব, ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না’ স্পষ্ট বার্তা অভিষেকের

 

সোমবার দুপুর পৌনে ৩টের সময় কালীঘাটের মন্দিরে পুজো দিয়ে শুরু হয় সংহতি মিছিল। মন্দিরে মায়ের মূর্তিতে লাল শাড়ি চড়িয়ে, ফল-মিষ্টি দিয়ে পূজা করেন মূখ্যমন্ত্রী। করেন আরতি। এরপর মন্ত্রোচ্চারণ করে মায়ের আরাধনা করেন তিনি। মায়ের পায়ে দেন পুষ্পাঞ্জলি। মা কালীকে নিবেদন করেন ছানার মিষ্টি ও সরপুরিয়া। কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়ে নিজের গাড়িতে করে মুখ্যমন্ত্রী চলে আসেন হাজরা পার্কে। সেখান থেকেই শুরু হয় মিছিল। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সংহতি যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন সর্বধর্মের গুরুরা। মিছিলে পা মেলান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, দীপক অধিকারি, দেবাশিষ কুমার সহ তৃণমূলের প্রায় সমস্ত প্রথম সারির নেতারা।
হাজরা পার্ক থেকে মিছিল শুরুর পরে মুখ্যমন্ত্রী হাজরা রোড ধরে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান টালিগঞ্জ ফাঁড়ির দিকে।

সেখান থেকে গরচা রোডের দিকে এগিয়ে যায় মিছিল। গরচা রোডে কিছুক্ষণ থামে সংহতি মিছিল। এখান থেকে স্কুটিতে করে গরচা গুরুদ্বোয়ারায় যান মমতা। গুরুদ্বোয়ারায় গিয়ে মিনিট খানেক প্রার্থনা করে ফের স্কুটিতে করে গরচা রোডে পৌঁছান মমতা। সেখান থেকে আবারও শুরু হয় মিছিল। দলের তরফে জানা গিয়েছে, গুরুদ্বোয়ারা মূল রাস্তা থেকে একটু ভেতরে হওয়ায় এই স্কুটির ব্যবস্থা করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর জন্য।

'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার', মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাতে হাত ধরে সংহতি মিছিলে পা মেলালেন ধর্মগুরুরা

গরচা রোড থেকে মিছিল এরপর এগিয়ে যায় বালিগঞ্জ ফাঁড়ির দিকে। সংহতি যাত্রার এই মিছিল দেখতে ভিড় জমান আশেপাশের সাধারণ বাসিন্দারা। তবে, এদিন দেখা যায়, নিজেদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য এবং মিছিলের মূল বার্তাকে সমর্থন করার জন্য বাড়ির মহিলারা এগিয়ে এসেছিলেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়। এদিন বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে একটি গির্জায় যান মমতা। খানিক্ষণ প্রার্থনা করেন। এরপর, সেখান থেকে বেরিয়ে ফের যোগ দেন মিছিলে। মিছিলে তাঁর পেছনে হাতে হাত ধরে হাঁটতে দেখা যায় বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুদের। এরপর, মিছিল এগিয়ে যায় কড়েয়া রোডের দিকে। যাওয়ার পথে কিছু মানুষের হাতে চাদর তুলে দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। এরপর, কড়েয়া ক্রসিং হয়ে মিছিল এগিয়ে যায় পার্ক সার্কাসের দিকে।

পার্ক সার্কাস মোড়ে ঢোকার আগে, মিছিলে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ফুলের তোড়া হাতে এগিয়ে আসে দুই শিশু। একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তারা তুলে দেয় ফুলের তোড়া। মুখ্যমন্ত্রীও পাল্টা ফুল তুলে দেন শিশুদের হাতে। দুই শিশুর মাথায় রাখেন স্নেহভরা হাত। ছবিও তোলেন তাদের পাশে নিয়ে।

এরপর, মিছিল আবার চলতে শুরু করে। এগিয়ে যায় পার্ক সার্কাস ময়দানের উদ্দেশ্যে। এখানে একটি মাজারে প্রার্থনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর চলে আসেন মঞ্চস্থলে। এদিন সংহতি যাত্রা থেকে কার্যত সর্বধর্ম সমন্বয়ের যে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে ধরেছেন তাতে অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ২০২৪-এর ভোটযুদ্ধে তিনিই মোদির প্রধান প্রতিপক্ষ।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাতে হাত ধরে সংহতি মিছিলে পা মেলালেন ধর্মগুরুরা

আপডেট : ২২ জানুয়ারী ২০২৪, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: এই দেশ কোনও একটি নির্দিষ্ট ধর্মের নয়। এই দেশ সর্ব ধর্মের। সর্ব ধর্মের সমন্বয়ে তৈরি এই দেশ। প্রত্যেকটি ধর্মেরই সমান গুরুত্ব রয়েছে এই দেশে, এই রাজ্যে। অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন সংহতি মিছিল থেকে ফের একবার সেই সম্প্রীতির বার্তাই তুলে ধরলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে কালীঘাটে পূজা দিয়ে হাজরা পার্ক থেকে যাত্রা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। যাত্রা শেষ হয় পার্ক সার্কাস ময়দানে। পথে প্রথমে কালীঘাট, তারপর গরচা গুরুদ্বোয়ারা, বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে গির্জা ও শেষে পার্ক সার্কাসের মসজিদে প্রার্থনা করে পার্ক সার্কাস ময়দানে আসেন মমতা। পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে ধর্মগুরুদের পাশে নিয়ে ফের একবার রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে দিলেন সম্প্রীতির বার্তা। মনে করিয়ে দিলেন, ‘ধর্ম তোমার ধর্ম আমার, উৎসব সবার।’

'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার', মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাতে হাত ধরে সংহতি মিছিলে পা মেলালেন ধর্মগুরুরা

আরও পড়ুন: মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে সরব, ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না’ স্পষ্ট বার্তা অভিষেকের

 

সোমবার দুপুর পৌনে ৩টের সময় কালীঘাটের মন্দিরে পুজো দিয়ে শুরু হয় সংহতি মিছিল। মন্দিরে মায়ের মূর্তিতে লাল শাড়ি চড়িয়ে, ফল-মিষ্টি দিয়ে পূজা করেন মূখ্যমন্ত্রী। করেন আরতি। এরপর মন্ত্রোচ্চারণ করে মায়ের আরাধনা করেন তিনি। মায়ের পায়ে দেন পুষ্পাঞ্জলি। মা কালীকে নিবেদন করেন ছানার মিষ্টি ও সরপুরিয়া। কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়ে নিজের গাড়িতে করে মুখ্যমন্ত্রী চলে আসেন হাজরা পার্কে। সেখান থেকেই শুরু হয় মিছিল। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সংহতি যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন সর্বধর্মের গুরুরা। মিছিলে পা মেলান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, দীপক অধিকারি, দেবাশিষ কুমার সহ তৃণমূলের প্রায় সমস্ত প্রথম সারির নেতারা।
হাজরা পার্ক থেকে মিছিল শুরুর পরে মুখ্যমন্ত্রী হাজরা রোড ধরে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান টালিগঞ্জ ফাঁড়ির দিকে।

সেখান থেকে গরচা রোডের দিকে এগিয়ে যায় মিছিল। গরচা রোডে কিছুক্ষণ থামে সংহতি মিছিল। এখান থেকে স্কুটিতে করে গরচা গুরুদ্বোয়ারায় যান মমতা। গুরুদ্বোয়ারায় গিয়ে মিনিট খানেক প্রার্থনা করে ফের স্কুটিতে করে গরচা রোডে পৌঁছান মমতা। সেখান থেকে আবারও শুরু হয় মিছিল। দলের তরফে জানা গিয়েছে, গুরুদ্বোয়ারা মূল রাস্তা থেকে একটু ভেতরে হওয়ায় এই স্কুটির ব্যবস্থা করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর জন্য।

'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার', মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাতে হাত ধরে সংহতি মিছিলে পা মেলালেন ধর্মগুরুরা

গরচা রোড থেকে মিছিল এরপর এগিয়ে যায় বালিগঞ্জ ফাঁড়ির দিকে। সংহতি যাত্রার এই মিছিল দেখতে ভিড় জমান আশেপাশের সাধারণ বাসিন্দারা। তবে, এদিন দেখা যায়, নিজেদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য এবং মিছিলের মূল বার্তাকে সমর্থন করার জন্য বাড়ির মহিলারা এগিয়ে এসেছিলেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়। এদিন বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে একটি গির্জায় যান মমতা। খানিক্ষণ প্রার্থনা করেন। এরপর, সেখান থেকে বেরিয়ে ফের যোগ দেন মিছিলে। মিছিলে তাঁর পেছনে হাতে হাত ধরে হাঁটতে দেখা যায় বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুদের। এরপর, মিছিল এগিয়ে যায় কড়েয়া রোডের দিকে। যাওয়ার পথে কিছু মানুষের হাতে চাদর তুলে দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। এরপর, কড়েয়া ক্রসিং হয়ে মিছিল এগিয়ে যায় পার্ক সার্কাসের দিকে।

পার্ক সার্কাস মোড়ে ঢোকার আগে, মিছিলে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ফুলের তোড়া হাতে এগিয়ে আসে দুই শিশু। একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তারা তুলে দেয় ফুলের তোড়া। মুখ্যমন্ত্রীও পাল্টা ফুল তুলে দেন শিশুদের হাতে। দুই শিশুর মাথায় রাখেন স্নেহভরা হাত। ছবিও তোলেন তাদের পাশে নিয়ে।

এরপর, মিছিল আবার চলতে শুরু করে। এগিয়ে যায় পার্ক সার্কাস ময়দানের উদ্দেশ্যে। এখানে একটি মাজারে প্রার্থনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর চলে আসেন মঞ্চস্থলে। এদিন সংহতি যাত্রা থেকে কার্যত সর্বধর্ম সমন্বয়ের যে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে ধরেছেন তাতে অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ২০২৪-এর ভোটযুদ্ধে তিনিই মোদির প্রধান প্রতিপক্ষ।