০৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রামনবমীর সংঘর্ষের প্রভাব পড়ল ঈদে! মধ্যপ্রদেশের খারগোনে জারি কঠোর কারফিউ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২ মে ২০২২, সোমবার
  • / 28

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রামনবমীর সংঘর্ষের ঘটনার প্রভাব পড়ল ঈদে। মে মাসের ২ ও ৩ তারিখ ঈদ। খুশির পরবে মেতে উঠেছে সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এদিকে উৎসব-আনন্দে যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মধ্যপ্রদেশের খারগোনে জারি হল কঠোর কারফিউ। সরকারের তরফ থেকে ঈদে নামায বাড়িতে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে অক্ষয় তৃতীয়া ও পরশুরাম জয়ন্তীতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (খারগোন) সুমের সিং মুজলদা জানিয়েছেন, ঈদের নামায বাড়িতে পড়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অক্ষয় তৃতীয়া এবং পরশুরাম জয়ন্তীতে কোনও অনুষ্ঠান জেলায় আয়োজন করতে দেওয়া হবে না। বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানেরও অনুমতি নেই।   খারগোন প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার ৯ ঘন্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়। তবে তারপরও ঈদে কারফিউ শিথিলতা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। ঈদের দিন কারফিউ শিথিল করা হবে কিনা তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। তবে ইতিমধ্যেই শান্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সম্ভবত ঈদের দিন কারফিউ শিথিল করার কোনও সম্ভাবনা নেই।  অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানিয়েছেন, ১ মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে কারফিউ শিথিল করা হয়। দোকান-বাজার ওই সময় খোলা থাকে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পাস ব্যবহার করতে হবে। তবে পরিস্থিতির প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হতে পারে।

আরও পড়ুন: ঈদ-উল-আযহা: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে জোরদার প্রস্তুতি পুরনিগমের

খোরগোনের ইনচার্জ পুলিশ সুপার রোহিত কাশওয়ানি জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ও অস্থায়ী কারাগার মোতায়েন করা হয়েছে। জরুরি পরিষেবার ভিত্তিতে পেট্রোল পাম্প, কেরোসিন তেলের ডিপো, দুধ, সবজি, ওষুধ, সেলুন খোলা থাকছে। তবে বন্ধ থাকবে ধর্মীয় স্থানগুলি। কারফিউ শিথিল হলে যাত্রীবাহী বাস চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: জয়নগরে ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে প্রশাসনিক বৈঠক

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল রাম নবমীকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধ্যপ্রদেশের খারগোন। পাথর ছোড়াছুড়িকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ চেহারা নেয় পরিস্থিতি। একদল মানুষ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। এসপির পায়ে গুলি লাগে। পুলিশ ছাড়াও আহত হন চারজন। কিছু বাড়ি এবং যানবাহনও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গোটা এলাকাজুড়ে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। পুলিশ ৬০ থেকে ৭০ জনকে হেফাজতে নেয়। ১৪ এপ্রিল থেকে স্থানীয় প্রশাসন প্রতিদিন কয়েক ঘন্টার জন্য কারফিউ শিথিল করেছে। শিথিলতার সময়ে দুধ, সবজি, ওষুধের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ধর্মীয় স্থানগুলি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া আছে।

আরও পড়ুন: পুরোহিতকে মারধরের অভিযোগ BJP বিধায়কের ছেলে ও সঙ্গীদের বিরুদ্ধে 

প্রসঙ্গত, রাম নবমীর মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় গুজরাত,  মধ্যপ্রদেশ,  ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে। গুজরাতের সবরকাঁথা জেলার হিমাতনগরের খাম্বাতে, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে ৬৫  বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হন। ঝাড়খণ্ডের লোহারদাগায় রাম নবমীর মিছিলে পাথর ছোড়ার সময় তিনজন গুরুতর আহত হন। সংবেদনশীল এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

এদিন সংঘর্ষ শুরু হয় জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্যাম্পাসে আমিষ  খাবার নিষিদ্ধ করার জন্য এভিবিপি জোরজবরদস্তি করে বলে অভিযোগ।

কর্নাটকের মুলবাগাল শহরে পাথর ছোড়ার ঘটনায় কোলারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দোকানে ভাঙচুর চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পশ্চিমবঙ্গেও রাম নবমী উদযাপন উপলক্ষে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রামনবমীর সংঘর্ষের প্রভাব পড়ল ঈদে! মধ্যপ্রদেশের খারগোনে জারি কঠোর কারফিউ

আপডেট : ২ মে ২০২২, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রামনবমীর সংঘর্ষের ঘটনার প্রভাব পড়ল ঈদে। মে মাসের ২ ও ৩ তারিখ ঈদ। খুশির পরবে মেতে উঠেছে সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এদিকে উৎসব-আনন্দে যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মধ্যপ্রদেশের খারগোনে জারি হল কঠোর কারফিউ। সরকারের তরফ থেকে ঈদে নামায বাড়িতে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে অক্ষয় তৃতীয়া ও পরশুরাম জয়ন্তীতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (খারগোন) সুমের সিং মুজলদা জানিয়েছেন, ঈদের নামায বাড়িতে পড়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অক্ষয় তৃতীয়া এবং পরশুরাম জয়ন্তীতে কোনও অনুষ্ঠান জেলায় আয়োজন করতে দেওয়া হবে না। বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানেরও অনুমতি নেই।   খারগোন প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার ৯ ঘন্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়। তবে তারপরও ঈদে কারফিউ শিথিলতা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। ঈদের দিন কারফিউ শিথিল করা হবে কিনা তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। তবে ইতিমধ্যেই শান্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সম্ভবত ঈদের দিন কারফিউ শিথিল করার কোনও সম্ভাবনা নেই।  অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানিয়েছেন, ১ মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে কারফিউ শিথিল করা হয়। দোকান-বাজার ওই সময় খোলা থাকে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পাস ব্যবহার করতে হবে। তবে পরিস্থিতির প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হতে পারে।

আরও পড়ুন: ঈদ-উল-আযহা: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে জোরদার প্রস্তুতি পুরনিগমের

খোরগোনের ইনচার্জ পুলিশ সুপার রোহিত কাশওয়ানি জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ও অস্থায়ী কারাগার মোতায়েন করা হয়েছে। জরুরি পরিষেবার ভিত্তিতে পেট্রোল পাম্প, কেরোসিন তেলের ডিপো, দুধ, সবজি, ওষুধ, সেলুন খোলা থাকছে। তবে বন্ধ থাকবে ধর্মীয় স্থানগুলি। কারফিউ শিথিল হলে যাত্রীবাহী বাস চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: জয়নগরে ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে প্রশাসনিক বৈঠক

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল রাম নবমীকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধ্যপ্রদেশের খারগোন। পাথর ছোড়াছুড়িকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ চেহারা নেয় পরিস্থিতি। একদল মানুষ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। এসপির পায়ে গুলি লাগে। পুলিশ ছাড়াও আহত হন চারজন। কিছু বাড়ি এবং যানবাহনও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গোটা এলাকাজুড়ে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। পুলিশ ৬০ থেকে ৭০ জনকে হেফাজতে নেয়। ১৪ এপ্রিল থেকে স্থানীয় প্রশাসন প্রতিদিন কয়েক ঘন্টার জন্য কারফিউ শিথিল করেছে। শিথিলতার সময়ে দুধ, সবজি, ওষুধের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ধর্মীয় স্থানগুলি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া আছে।

আরও পড়ুন: পুরোহিতকে মারধরের অভিযোগ BJP বিধায়কের ছেলে ও সঙ্গীদের বিরুদ্ধে 

প্রসঙ্গত, রাম নবমীর মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় গুজরাত,  মধ্যপ্রদেশ,  ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে। গুজরাতের সবরকাঁথা জেলার হিমাতনগরের খাম্বাতে, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে ৬৫  বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হন। ঝাড়খণ্ডের লোহারদাগায় রাম নবমীর মিছিলে পাথর ছোড়ার সময় তিনজন গুরুতর আহত হন। সংবেদনশীল এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

এদিন সংঘর্ষ শুরু হয় জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্যাম্পাসে আমিষ  খাবার নিষিদ্ধ করার জন্য এভিবিপি জোরজবরদস্তি করে বলে অভিযোগ।

কর্নাটকের মুলবাগাল শহরে পাথর ছোড়ার ঘটনায় কোলারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দোকানে ভাঙচুর চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পশ্চিমবঙ্গেও রাম নবমী উদযাপন উপলক্ষে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।