১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনের সেনাকে ’নাৎসিবাদী সরকার’ উৎখাতের ডাক পুতিনের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২, শনিবার
  • / 50

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : সবচেয়ে সংকটজনক সময়ের মুখোমুখি ইউক্রেন। সেদেশের সেনা সংখ্যা কম হওয়ায় যুদ্ধে যোগ দিতে হচ্ছে আম আদমিকে । কম সময়ের মধ্যে তাদের বন্দুক চালানো শেখানো হচ্ছে। এরপর সরাসরি তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে যুদ্ধে। কারণ কিয়েভে প্রবেশে করেছে রাশিয়ার সেনা। রাজধানীর বিভিন্ন পথে দেখা যাচ্ছে রাশিয়ান ট্যাঙ্ক। গুলি চলছে বোমার বিকট শব্দে আতঙ্ক প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ইউক্রেনীয়রা হয় পালাচ্ছেন নয়তো বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে পুতিনের সেনার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সেনা কতক্ষণ বা কতদিন প্রতিরোধ টিকিয়ে রাখতে পারবে সেটাই দেখার।

 

আরও পড়ুন: রাশিয়ায় নিষিদ্ধ ব্রিটিশ কাউন্সিল

আপাতত কিয়েভে চলছে ধুন্ধুমার যুদ্ধ। জানা যায় রুশ সেনাকে শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে। কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ নিতে পুতিন বাহিনী যেমন মরিয়া হয়ে উঠেছে তেমনই নিজেদের রাজধানী রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করছে ইউক্রেনের সেনারা। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে রাজধানীতে তীব্র গুলিবিনিময় চলছে। ইউক্রেনের রাজধানীতে এখন শুধু বিকট শব্দ আর গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। কিয়েভের ভাসিল্কিভ এলাকায় তুমুল লড়াইয়ের খবর মিলেছে। লড়াইয়ের বিষয়টি কিয়েভ সরকারের পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে ।

আরও পড়ুন: পহেলগাঁও হামলার নিন্দা জানিয়ে মোদিকে ফোন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের

 

আরও পড়ুন: Pahalgam terror attack: ৯ মে রাশিয়া সফর বাতিল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

শহরের বাসিন্দাদের সতর্ক করে তাদের ঘরে বা আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তু তারা গুলি করে ধ্বংস করেছে। রাশিয়ার দুটি বৃহৎ সামরিক বিমানও ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন সেনা। ভূপাতিত করা এই বিমান দুটিতে কমপক্ষে ৩০০ রুশ সেনা ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে।

 

এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দিয়েছেন। ইউক্রেন সরকার এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ’নব্যনাৎসি’ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রুশ বিরোধী বাহিনী ’ব্যান্ডেরাইট’ উল্লেখ করে বলেন তারা সন্ত্রাসীদের মত আচরণ করছে। রাশিয়া শান্তিকামী জনগণকে হত্যা করছে এমন অভিযোগ তুলে তারা সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে। এটা সুনিশ্চিত যে বিদেশীদের কথায় তারা এসব কিছু করছে। সবার উপরে তাদের পরামর্শ দিচ্ছে আমেরিকা।’

 

এরপর ইউক্রেন সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন ‘ইউক্রেনের সশস্ত্র সেনাদের উদ্দেশ্যে আমি আবার বলতে চাই এই নব্য নাৎসিদের আপনাদের শিশু আপনাদের স্ত্রী ও বৃদ্ধ মানুষদের মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে দেবেন না। নিজেদের হাতে ক্ষমতা তুলে নিন। কিয়েভের ওই মাদকাসক্ত এবং নব্য নাৎসি দলের সাথে কথা বলার চেয়ে আমরা এবং আপনারা কথা বললে একটা চুক্তিতে পৌঁছানো অনেক সহজ হবে।’ জানা গিয়েছে কিয়েভের কাছে হস্তোমেল বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রন নিয়েছে রুশ সেনা।

 

এরপর ইউক্রেনও ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে যুদ্ধে নামিয়েছে। এমতাবস্থায় দুই দেশের মধ্যে একটা শান্তি আলোচনার ব্যাপারেও কথা চলছে। বেলারুসের রাজধানী মিনস্কে ইউক্রেনের সাথে আলোচনায় বসতে রাশিয়া রাজি আছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। এই আলোচনার পূর্ব শর্তই হল ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণ ও নিরপেক্ষ অবস্থান ঘোষণা। তবে ইউক্রেন এই শর্তে আলোচনায় যেতে নাও রাজি হতে পারে। রাষ্ট্র সংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানায় তাদের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী এক লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। যুদ্ধ বাড়লে ৫০লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু হতে পারে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইউক্রেনের সেনাকে ’নাৎসিবাদী সরকার’ উৎখাতের ডাক পুতিনের

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : সবচেয়ে সংকটজনক সময়ের মুখোমুখি ইউক্রেন। সেদেশের সেনা সংখ্যা কম হওয়ায় যুদ্ধে যোগ দিতে হচ্ছে আম আদমিকে । কম সময়ের মধ্যে তাদের বন্দুক চালানো শেখানো হচ্ছে। এরপর সরাসরি তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে যুদ্ধে। কারণ কিয়েভে প্রবেশে করেছে রাশিয়ার সেনা। রাজধানীর বিভিন্ন পথে দেখা যাচ্ছে রাশিয়ান ট্যাঙ্ক। গুলি চলছে বোমার বিকট শব্দে আতঙ্ক প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ইউক্রেনীয়রা হয় পালাচ্ছেন নয়তো বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে পুতিনের সেনার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সেনা কতক্ষণ বা কতদিন প্রতিরোধ টিকিয়ে রাখতে পারবে সেটাই দেখার।

 

আরও পড়ুন: রাশিয়ায় নিষিদ্ধ ব্রিটিশ কাউন্সিল

আপাতত কিয়েভে চলছে ধুন্ধুমার যুদ্ধ। জানা যায় রুশ সেনাকে শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে। কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ নিতে পুতিন বাহিনী যেমন মরিয়া হয়ে উঠেছে তেমনই নিজেদের রাজধানী রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করছে ইউক্রেনের সেনারা। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে রাজধানীতে তীব্র গুলিবিনিময় চলছে। ইউক্রেনের রাজধানীতে এখন শুধু বিকট শব্দ আর গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। কিয়েভের ভাসিল্কিভ এলাকায় তুমুল লড়াইয়ের খবর মিলেছে। লড়াইয়ের বিষয়টি কিয়েভ সরকারের পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে ।

আরও পড়ুন: পহেলগাঁও হামলার নিন্দা জানিয়ে মোদিকে ফোন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের

 

আরও পড়ুন: Pahalgam terror attack: ৯ মে রাশিয়া সফর বাতিল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

শহরের বাসিন্দাদের সতর্ক করে তাদের ঘরে বা আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তু তারা গুলি করে ধ্বংস করেছে। রাশিয়ার দুটি বৃহৎ সামরিক বিমানও ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন সেনা। ভূপাতিত করা এই বিমান দুটিতে কমপক্ষে ৩০০ রুশ সেনা ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে।

 

এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দিয়েছেন। ইউক্রেন সরকার এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ’নব্যনাৎসি’ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রুশ বিরোধী বাহিনী ’ব্যান্ডেরাইট’ উল্লেখ করে বলেন তারা সন্ত্রাসীদের মত আচরণ করছে। রাশিয়া শান্তিকামী জনগণকে হত্যা করছে এমন অভিযোগ তুলে তারা সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে। এটা সুনিশ্চিত যে বিদেশীদের কথায় তারা এসব কিছু করছে। সবার উপরে তাদের পরামর্শ দিচ্ছে আমেরিকা।’

 

এরপর ইউক্রেন সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন ‘ইউক্রেনের সশস্ত্র সেনাদের উদ্দেশ্যে আমি আবার বলতে চাই এই নব্য নাৎসিদের আপনাদের শিশু আপনাদের স্ত্রী ও বৃদ্ধ মানুষদের মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে দেবেন না। নিজেদের হাতে ক্ষমতা তুলে নিন। কিয়েভের ওই মাদকাসক্ত এবং নব্য নাৎসি দলের সাথে কথা বলার চেয়ে আমরা এবং আপনারা কথা বললে একটা চুক্তিতে পৌঁছানো অনেক সহজ হবে।’ জানা গিয়েছে কিয়েভের কাছে হস্তোমেল বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রন নিয়েছে রুশ সেনা।

 

এরপর ইউক্রেনও ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে যুদ্ধে নামিয়েছে। এমতাবস্থায় দুই দেশের মধ্যে একটা শান্তি আলোচনার ব্যাপারেও কথা চলছে। বেলারুসের রাজধানী মিনস্কে ইউক্রেনের সাথে আলোচনায় বসতে রাশিয়া রাজি আছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। এই আলোচনার পূর্ব শর্তই হল ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণ ও নিরপেক্ষ অবস্থান ঘোষণা। তবে ইউক্রেন এই শর্তে আলোচনায় যেতে নাও রাজি হতে পারে। রাষ্ট্র সংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানায় তাদের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী এক লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। যুদ্ধ বাড়লে ৫০লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু হতে পারে।