২৮ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণ মামলা: সুপ্রিম নির্দেশে নিষিদ্ধ টু ফিঙ্গার টেস্ট

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 162

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ধর্ষণ হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করতে টু ফিঙ্গার টেস্টকে নিষিদ্ধ বলে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই পরীক্ষা আসলে একজন মহিলার প্রতি অসম্মানজনক বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। কীভাবে এতদিন ধরে এমন পরীক্ষা চলে আসছে, তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের ‘ডেজিগনেটেড’ প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। এ ব্যাপারে দেশের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালকে অবহিত করতে বলার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মেডিক্যাল পরীক্ষার পাঠ্যক্রম থেকেও এই সংক্রান্ত পাঠের বিষয় সরাতে হবে।

 

আরও পড়ুন: ‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী পুলিশ’, সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসক

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। শীর্ষকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকার এবং সমস্ত রাজ্য সরকারকে এই সংক্রান্ত গাইডলাইন মেনে চলতে বলেছে।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরের আপেল চাষিদের জন্য রেলের ‘Apple Express’

 

আরও পড়ুন: NEPAL-এ নিষিদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া, সংসদ ভবনে ঢুকে বিক্ষোভ তরুণ-তরুণীদের

ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে একজন মহিলার কুমারিত্ব পরীক্ষা করার জন্য বহু ক্ষেত্রেই এই বিতর্কিত টু ফিঙ্গার টেস্ট করা হয়। এই পরীক্ষায় অভিযোগকারিণী বা নির্যাতিতার যোনিতে দুই আঙুল ঢুকিয়ে যোনির মাংসপেশি কতটা প্রসারিত হচ্ছে, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। এই পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলেও অভিযোগ। বহু দিন ধরে বিতর্কিত সেই পরীক্ষাকেই সোমবার নিষিদ্ধ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

 

একটি ধর্ষণ মামলার সূত্রে এই রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘একজন নির্যাতিতার অতীত যৌনজীবন কেমন ছিল, তা মামলার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আজও এই পরীক্ষা চলছে, সেটাই দুঃখজনক।’ নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও বলেন, এবার থেকে কেউ এই টু ফিঙ্গার টেস্ট করলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ধর্ষণের পরীক্ষা হিসেবে টু ফিঙ্গার টেস্টকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল দশ বছর আগে। ২০১২ সালে দিল্লিতে নির্ভয়া-কাণ্ডের পরের বছরই সুপ্রিম কোর্ট দুই আঙুলের পরীক্ষাকে মহিলাদের জন্য মর্যাদাহানিকর বলে মন্তব্য করে।

তারপরও অবশ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ষিতাকে এই ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে বলে জানিয়ে আদালত সোমবার বলে, ‘একজন ধর্ষিতাকে যখন এই পরীক্ষা করানো হয় তিনি নিশ্চিতভাবেই আরও একবার একই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যান। একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণার উপর দাঁড়িয়ে তাঁকে ওই যন্ত্রণা দেওয়া অর্থহীন।’

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ধর্ষণ মামলা: সুপ্রিম নির্দেশে নিষিদ্ধ টু ফিঙ্গার টেস্ট

আপডেট : ১ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ধর্ষণ হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করতে টু ফিঙ্গার টেস্টকে নিষিদ্ধ বলে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই পরীক্ষা আসলে একজন মহিলার প্রতি অসম্মানজনক বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। কীভাবে এতদিন ধরে এমন পরীক্ষা চলে আসছে, তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের ‘ডেজিগনেটেড’ প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। এ ব্যাপারে দেশের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালকে অবহিত করতে বলার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মেডিক্যাল পরীক্ষার পাঠ্যক্রম থেকেও এই সংক্রান্ত পাঠের বিষয় সরাতে হবে।

 

আরও পড়ুন: ‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী পুলিশ’, সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসক

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। শীর্ষকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকার এবং সমস্ত রাজ্য সরকারকে এই সংক্রান্ত গাইডলাইন মেনে চলতে বলেছে।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরের আপেল চাষিদের জন্য রেলের ‘Apple Express’

 

আরও পড়ুন: NEPAL-এ নিষিদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া, সংসদ ভবনে ঢুকে বিক্ষোভ তরুণ-তরুণীদের

ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে একজন মহিলার কুমারিত্ব পরীক্ষা করার জন্য বহু ক্ষেত্রেই এই বিতর্কিত টু ফিঙ্গার টেস্ট করা হয়। এই পরীক্ষায় অভিযোগকারিণী বা নির্যাতিতার যোনিতে দুই আঙুল ঢুকিয়ে যোনির মাংসপেশি কতটা প্রসারিত হচ্ছে, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। এই পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলেও অভিযোগ। বহু দিন ধরে বিতর্কিত সেই পরীক্ষাকেই সোমবার নিষিদ্ধ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

 

একটি ধর্ষণ মামলার সূত্রে এই রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘একজন নির্যাতিতার অতীত যৌনজীবন কেমন ছিল, তা মামলার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আজও এই পরীক্ষা চলছে, সেটাই দুঃখজনক।’ নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও বলেন, এবার থেকে কেউ এই টু ফিঙ্গার টেস্ট করলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ধর্ষণের পরীক্ষা হিসেবে টু ফিঙ্গার টেস্টকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল দশ বছর আগে। ২০১২ সালে দিল্লিতে নির্ভয়া-কাণ্ডের পরের বছরই সুপ্রিম কোর্ট দুই আঙুলের পরীক্ষাকে মহিলাদের জন্য মর্যাদাহানিকর বলে মন্তব্য করে।

তারপরও অবশ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ষিতাকে এই ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে বলে জানিয়ে আদালত সোমবার বলে, ‘একজন ধর্ষিতাকে যখন এই পরীক্ষা করানো হয় তিনি নিশ্চিতভাবেই আরও একবার একই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যান। একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণার উপর দাঁড়িয়ে তাঁকে ওই যন্ত্রণা দেওয়া অর্থহীন।’