২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলায় এবার স্বাস্থ্যসাথীতে ফুসফুস প্রতিস্থাপন

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 44

পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। এবার সেই প্রকল্পের হাত ধরেই বাংলারবুকে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ঘটনাও ঘটল। গত শনিবার রাতে মাত্র ১৬ বছরের এক কিশোরের ফুসফুস প্রতিস্থাপিত হল কলকাতার ইএম বাইপাস লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে।  প্রতিস্থাপন পর্ব চলে রবিবার সকাল পর্যন্ত।

 

আরও পড়ুন: বাংলার প্রাচীন পাণ্ডুলিপির ডিজিটালাইজেশন

পথ দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কের মৃত্যু হওয়া ওড়িশার এক ৩০ বছরের দাতার ফুসফুস প্রতিস্থাপিত হয়েছে বারাসতের বাসিন্দা ওই কিশোরের দেহে। ওই প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। কিছু অর্থ দেয় ওই কিশোরের পরিবারও। ক্রাউড ফান্ডিং ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমেও বাকি অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা চলছে এখনও। এর আগে এই হাসপাতালেই রাজ্যের মধ্যে প্রথম ফুসফুস প্রতিস্থাপন হয়েছিল। যদিও সেই রোগীকে দু’সপ্তাহের বেশি বাঁচানো সম্ভব হয়নি।  এই অবস্থায় খুব দ্রুত ফুসফুস জোগাড় করাও খুব কঠিন হয়ে পড়ে। ফুসফুস দাতার অপেক্ষায় ওই কিশোরের বাড়ির লোকজন কার্যত হন্যে হয়ে কলকাতার সব হাসপাতালেই ঢুঁ মারা শুরু করেছিলেন। সেই সঙ্গে রাজ্যের অনান্য হাসপাতালগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন। ঘটনাচক্রে শনিবার ওড়িশার পথ দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক ব্যক্তির ব্রেন ডেথ হয়। তাঁর ফুসফুস ম্যাচ করায় রোটো মারফৎ বার্তা পেয়ে চিকিৎসকদল ওড়িশা গিয়ে ফুসফুস সংগ্রহ করে আনেন।

আরও পড়ুন: সিকিমে দুর্ঘটনার কবলে বাংলা ও ওড়িশার পর্যটকরা, নিখোঁজ ৯ জন

 

আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টির অশনি সংকেত বাংলায়, ভাসতে পারে সাত জেলা

শনিবার রাতেই শুরু হয় অস্ত্রোপচার। রবিবার ভোরে তা শেষ হয়। ওই কিশোরের অস্ত্রোপচারের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকদের দাবি, ফুসফুস প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। তবে ৪৮ ঘণ্টার আগে কিছু বলা উচিত নয়। কেননা এক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠিন হল, প্রতিস্থাপনের পর সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা।  ভুলক্রমে বাড়িতে আগাছা মারার জন্য প্যারাকোয়াট ডাইক্লোরাইড নামে এক ধরনের কীটনাশক রাখা হয়েছিল একটি কোল্ড ড্রিংকস-এর বোতলে। ওই কিশোর কোল্ড ড্রিংকস ভেবে সেই বোতলে চুমুক দেয়। তাতেই ঘটে বিপত্তি। ওই কীটনাশক এতটাই মারাত্মক যে, তা শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন অঙ্গ গলিয়ে দেয়। বহুক্ষেত্রেই দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি ও মৃত্যু ঘটে।

 

জীবিত থাকলে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝা যায় দিন সাতেক পর থেকে। তখন কিডনি, লিভার ও ফুসফুস সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কিশোরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল ফুসফুসে। অভ্যন্তরীণ ছবি দেখলে মনে হবে, কেউ যেন তার ফুসফুসটা জ্বালিয়ে কালো করে দিয়েছে। ঘটনার ৭দিন পর হাসপাতালে আনা হয় তাকে। তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় টানা ৩৩ দিন কৃত্রিম ফুসফুস বা একমো সার্পোটে রাখা হয় তাকে। তারপরেও চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন ফুসফুস প্রতিস্থাপন না করলে তাকে বাঁচানো যাবে না। এদিকে, ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ফলে রাজ্যের সাধারণ মানুষদের মধ্যেও দিশা তৈরি হয়েছে।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলায় এবার স্বাস্থ্যসাথীতে ফুসফুস প্রতিস্থাপন

আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। এবার সেই প্রকল্পের হাত ধরেই বাংলারবুকে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ঘটনাও ঘটল। গত শনিবার রাতে মাত্র ১৬ বছরের এক কিশোরের ফুসফুস প্রতিস্থাপিত হল কলকাতার ইএম বাইপাস লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে।  প্রতিস্থাপন পর্ব চলে রবিবার সকাল পর্যন্ত।

 

আরও পড়ুন: বাংলার প্রাচীন পাণ্ডুলিপির ডিজিটালাইজেশন

পথ দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কের মৃত্যু হওয়া ওড়িশার এক ৩০ বছরের দাতার ফুসফুস প্রতিস্থাপিত হয়েছে বারাসতের বাসিন্দা ওই কিশোরের দেহে। ওই প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। কিছু অর্থ দেয় ওই কিশোরের পরিবারও। ক্রাউড ফান্ডিং ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমেও বাকি অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা চলছে এখনও। এর আগে এই হাসপাতালেই রাজ্যের মধ্যে প্রথম ফুসফুস প্রতিস্থাপন হয়েছিল। যদিও সেই রোগীকে দু’সপ্তাহের বেশি বাঁচানো সম্ভব হয়নি।  এই অবস্থায় খুব দ্রুত ফুসফুস জোগাড় করাও খুব কঠিন হয়ে পড়ে। ফুসফুস দাতার অপেক্ষায় ওই কিশোরের বাড়ির লোকজন কার্যত হন্যে হয়ে কলকাতার সব হাসপাতালেই ঢুঁ মারা শুরু করেছিলেন। সেই সঙ্গে রাজ্যের অনান্য হাসপাতালগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন। ঘটনাচক্রে শনিবার ওড়িশার পথ দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক ব্যক্তির ব্রেন ডেথ হয়। তাঁর ফুসফুস ম্যাচ করায় রোটো মারফৎ বার্তা পেয়ে চিকিৎসকদল ওড়িশা গিয়ে ফুসফুস সংগ্রহ করে আনেন।

আরও পড়ুন: সিকিমে দুর্ঘটনার কবলে বাংলা ও ওড়িশার পর্যটকরা, নিখোঁজ ৯ জন

 

আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টির অশনি সংকেত বাংলায়, ভাসতে পারে সাত জেলা

শনিবার রাতেই শুরু হয় অস্ত্রোপচার। রবিবার ভোরে তা শেষ হয়। ওই কিশোরের অস্ত্রোপচারের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকদের দাবি, ফুসফুস প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। তবে ৪৮ ঘণ্টার আগে কিছু বলা উচিত নয়। কেননা এক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠিন হল, প্রতিস্থাপনের পর সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা।  ভুলক্রমে বাড়িতে আগাছা মারার জন্য প্যারাকোয়াট ডাইক্লোরাইড নামে এক ধরনের কীটনাশক রাখা হয়েছিল একটি কোল্ড ড্রিংকস-এর বোতলে। ওই কিশোর কোল্ড ড্রিংকস ভেবে সেই বোতলে চুমুক দেয়। তাতেই ঘটে বিপত্তি। ওই কীটনাশক এতটাই মারাত্মক যে, তা শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন অঙ্গ গলিয়ে দেয়। বহুক্ষেত্রেই দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি ও মৃত্যু ঘটে।

 

জীবিত থাকলে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোঝা যায় দিন সাতেক পর থেকে। তখন কিডনি, লিভার ও ফুসফুস সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কিশোরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল ফুসফুসে। অভ্যন্তরীণ ছবি দেখলে মনে হবে, কেউ যেন তার ফুসফুসটা জ্বালিয়ে কালো করে দিয়েছে। ঘটনার ৭দিন পর হাসপাতালে আনা হয় তাকে। তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় টানা ৩৩ দিন কৃত্রিম ফুসফুস বা একমো সার্পোটে রাখা হয় তাকে। তারপরেও চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন ফুসফুস প্রতিস্থাপন না করলে তাকে বাঁচানো যাবে না। এদিকে, ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ফলে রাজ্যের সাধারণ মানুষদের মধ্যেও দিশা তৈরি হয়েছে।