২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবনে এই প্রথম পালিত হল আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার
  • / 21

কুতুব উদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: সোমবার সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের শিবগঞ্জের চম্পা মহিলা সোসাইটি প্রাঙ্গনে পালিত হল আ্তর্জাতিক বিধবা দিবস। যা সুন্দরবনের বুকে বিরল এবং প্রথম।সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় দুই শতাধিক বিধবা মায়েরা সমবেত হয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে বিধবা মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে চারা গাছ। যাতে করে মায়েদের হাত ধরে সুন্দরবনে সবুজ পরিবেশ গড়ে ওঠে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অমল নায়েক, বিধবা মা রেখা নেয়ে, রেনুকা মন্ডল, আকলিমা ঘরামী, অন্নপূর্ণা নস্কর, আর্জি নস্কর সহ অন্যান্যরা।

আরও পড়ুন: অবশেষে কুলতলিতে খাঁচা বন্দি সুন্দরবনের বাঘ

উল্লেখ্য প্রতিবছর পালিত হয় আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস। অনেকের মনে হতে পারে এই দিবস পালনের কারণ কি? এই দিবসের পিছনে অনেক বড় একটি কারণ রয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস হিসেবে ২৩ জুন দিনটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: সল্টলেক থেকে সুন্দরবনের নয়া বাস রুট চালু

যদিও লুম্বা ফাউন্ডেশন ২০০৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস পালন করেছে। রাজিন্দর লুম্বা হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য। তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিধবা হওয়ার সময় একজন নারীর মুখোমুখি হওয়া সমস্যাগুলোর উপর কাজ করার জন্য লুম্বা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

আরও পড়ুন: পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত সুন্দরবন, জানাল বনদফতর

রাজিন্দর মা ১৯৫৪ সালে ৩৭ বছর বয়সে বিধবা হন। তারপর তাঁর মাকে যে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল, তা দেখে এই ফাউন্ডেশনটি চালু করতে অনুপ্রাণিত হন তিনি। ২০০৫ সালে চালু হওয়ার পর, লুম্বা ফাউন্ডেশন জাতিসংঘের স্বীকৃতির জন্য একটি পাঁচ বছরের বিশ্বব্যাপী প্রচারণার নেতৃত্ব দেয়। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ আন্তর্জাতিক বিধবা দিবসকে বার্ষিক বৈশ্বিক কর্ম দিবস হিসেবে গ্রহণ করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়।মূলত বিধবা নারীদের দারিদ্রতা এবং অবিচার সমাধানের জন্য এই দিনটি নিবেদন করা হয়েছে। বৈধব্য মোটেই সহজ বিষয় নয়। সঙ্গীহীন জীবন কাটানো একজন মানুষের জন্য খুবই কঠিন। মার্কিন আদমশুমারি ব্যুরো এক সমীক্ষায় জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সঙ্গীহীন হোন। যাদের মধ্যে ১১ মিলিয়নেরও বেশি নারী। সঙ্গীকে হারানো কখনই সহজ বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক বিধবা দিবসে সারা বিশ্বে বিধবাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করাই প্রধান লক্ষ্য।

যেহেতু যে কোনো মানুষের জন্য প্রিয়জনকে হারানো কঠিন এবং বেদনাদায়ক। তাই এই দিনের লক্ষ্য হলো বিশ্বজুড়ে বিধবাদের সেই অবিশ্বাস্য কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সমর্থন দেওয়া হয়। কারণ অনেক দেশে বিধবাদের উত্তরাধিকারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এমন সংস্কৃতিও রয়েছে যেখানে তারা বিধবাদের অভিশপ্ত বা জাদুবিদ্যার অনুশীলনের সঙ্গে যুক্ত হিসেবে দেখে। এই ভুল মানসিকতা তাদের সম্প্রদায় থেকে এমনকি তাদের সন্তানদের থেকেও বিচ্ছিন্ন করে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সুন্দরবনে এই প্রথম পালিত হল আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার

কুতুব উদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: সোমবার সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের শিবগঞ্জের চম্পা মহিলা সোসাইটি প্রাঙ্গনে পালিত হল আ্তর্জাতিক বিধবা দিবস। যা সুন্দরবনের বুকে বিরল এবং প্রথম।সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় দুই শতাধিক বিধবা মায়েরা সমবেত হয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে বিধবা মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে চারা গাছ। যাতে করে মায়েদের হাত ধরে সুন্দরবনে সবুজ পরিবেশ গড়ে ওঠে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অমল নায়েক, বিধবা মা রেখা নেয়ে, রেনুকা মন্ডল, আকলিমা ঘরামী, অন্নপূর্ণা নস্কর, আর্জি নস্কর সহ অন্যান্যরা।

আরও পড়ুন: অবশেষে কুলতলিতে খাঁচা বন্দি সুন্দরবনের বাঘ

উল্লেখ্য প্রতিবছর পালিত হয় আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস। অনেকের মনে হতে পারে এই দিবস পালনের কারণ কি? এই দিবসের পিছনে অনেক বড় একটি কারণ রয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস হিসেবে ২৩ জুন দিনটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: সল্টলেক থেকে সুন্দরবনের নয়া বাস রুট চালু

যদিও লুম্বা ফাউন্ডেশন ২০০৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বিধবা দিবস পালন করেছে। রাজিন্দর লুম্বা হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য। তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিধবা হওয়ার সময় একজন নারীর মুখোমুখি হওয়া সমস্যাগুলোর উপর কাজ করার জন্য লুম্বা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

আরও পড়ুন: পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত সুন্দরবন, জানাল বনদফতর

রাজিন্দর মা ১৯৫৪ সালে ৩৭ বছর বয়সে বিধবা হন। তারপর তাঁর মাকে যে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল, তা দেখে এই ফাউন্ডেশনটি চালু করতে অনুপ্রাণিত হন তিনি। ২০০৫ সালে চালু হওয়ার পর, লুম্বা ফাউন্ডেশন জাতিসংঘের স্বীকৃতির জন্য একটি পাঁচ বছরের বিশ্বব্যাপী প্রচারণার নেতৃত্ব দেয়। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ আন্তর্জাতিক বিধবা দিবসকে বার্ষিক বৈশ্বিক কর্ম দিবস হিসেবে গ্রহণ করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়।মূলত বিধবা নারীদের দারিদ্রতা এবং অবিচার সমাধানের জন্য এই দিনটি নিবেদন করা হয়েছে। বৈধব্য মোটেই সহজ বিষয় নয়। সঙ্গীহীন জীবন কাটানো একজন মানুষের জন্য খুবই কঠিন। মার্কিন আদমশুমারি ব্যুরো এক সমীক্ষায় জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সঙ্গীহীন হোন। যাদের মধ্যে ১১ মিলিয়নেরও বেশি নারী। সঙ্গীকে হারানো কখনই সহজ বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক বিধবা দিবসে সারা বিশ্বে বিধবাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করাই প্রধান লক্ষ্য।

যেহেতু যে কোনো মানুষের জন্য প্রিয়জনকে হারানো কঠিন এবং বেদনাদায়ক। তাই এই দিনের লক্ষ্য হলো বিশ্বজুড়ে বিধবাদের সেই অবিশ্বাস্য কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সমর্থন দেওয়া হয়। কারণ অনেক দেশে বিধবাদের উত্তরাধিকারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এমন সংস্কৃতিও রয়েছে যেখানে তারা বিধবাদের অভিশপ্ত বা জাদুবিদ্যার অনুশীলনের সঙ্গে যুক্ত হিসেবে দেখে। এই ভুল মানসিকতা তাদের সম্প্রদায় থেকে এমনকি তাদের সন্তানদের থেকেও বিচ্ছিন্ন করে।