১৭১টি ভুয়ো এনকাউন্টার অসমে, রাজ্য এইচআরসিকে তদন্তের নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত

- আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 122
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিজেপি শাসিত অসমে পুলিশি এনকাউন্টার নিয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে (অসম এইচআরসি) স্বাধীনভাবে দ্রুত তদন্ত করতে নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। রাজ্যে লাগাতার ‘ভুয়ো’ এনকাউন্টারের পাশাপাশি পিইউসিএল নির্দেশাবলী না মানার অভিযোগে বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যে ১৭১টি এনকাউন্টার নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন এক আইনজীবী।
অসমের আইনজীবী আরিফ মুহাম্মদ ইয়াসিন জাওয়াদ্দার দাবি করেছিলেন, যে ২০২১ সালের মে মাস থেকে (যখন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দায়িত্ব গ্রহণ করেন) অসম পুলিশ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০টিরও বেশি ভুয়া এনকাউন্টার করেছে।
বুধবার অসম এইচআরসির ভূমিকায় বিরক্তি প্রকাশ করে মামলার শুনানিতে বড় নির্দেশ দিল আদালত। এদিন বিচারপতি কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, “ভুয়ো এনকাউন্টারের যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্যিই গুরুতর। যদি এই ঘটনা প্রমাণিত হয়, তাহলে তা সংবিধানের ২১ নং অনুচ্ছেদের অধীনে জীবনের অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন হবে। একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের পর এসব ঘটনার কিছু কিছু প্রয়োজনীয় ও আইনগতভাবে ন্যায়সঙ্গত প্রমাণিত হতে পারে। নাগরিক স্বাধীনতার রক্ষক হিসাবে মানবাধিকার কমিশনগুলির ভূমিকা সর্বোচ্চ। অসম এইচআরসি কার্যকরভাবে তার দায়িত্ব পালন করবে বলে আশা করছি।”
আদালত সাফ জানিয়েছে, আবেদনকারী যে ১৭১ টি মামলা আদালতের দৃষ্টিতে নিয়ে এসেছেন, তার প্রত্যেকটিই বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এরপরই শীর্ষ আদালত এক নির্দেশে বলেছে, “আমরা মনে করি যে এই বিষয়ে তদন্তটি রাজ্য এইচআরসি-কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অর্পণ করা উপযুক্ত হবে। আইন অনুসারে স্বাধীনভাবে এবং দ্রুততার সাথে অভিযোগের প্রয়োজনীয় তদন্তের জন্য বিষয়টি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের বোর্ডে পুনরায় উত্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কথিত ঘটনার শিকার ব্যক্তি বা তাদের পরিবারের সদস্যদের বিচারকার্যে অংশগ্রহণের সুষ্ঠু ও অর্থবহ সুযোগ দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে, আমরা রাজ্য এইচআরসিকে নির্দেশ দিচ্ছি যে সমস্ত ব্যক্তিকে যারা ক্ষতিগ্রস্থ বলে দাবি করে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করতে।
রাজ্য এইচআরসি ক্ষতিগ্রস্থ, তাদের পরিবার বা অন্যান্য ব্যক্তিদের পরিচয় সম্পর্কিত গোপনীয়তা নিশ্চিত করবে।” অভিযোগগুলির তদন্ত করতে অসম মানবাধিকার কমিশনকে সব রকমের সহযোগিতা করতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে বলেও সাফ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেছে, এইচআরসিকে অভিযুক্ত ভুক্তভোগী, তাদের পরিবারের সদস্য ও সাক্ষীদের পরিচয় রক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ক্ষতিগ্রস্থরা যাতে সুবিধাবঞ্চিত না হন তা নিশ্চিত করার জন্য অসম রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে দুস্থদের আইনি সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।