২৯ জুন ২০২৫, রবিবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজা-ইসরাইল যুদ্ধবিরতিতে আশার আলো, এক সপ্তাহের মধ্যে চুক্তির ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 31

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গাজা ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি শীঘ্রই হতে পারে—এমন আশাবাদী বার্তা দিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “গাজা নিয়ে চুক্তিটা এবার হোক। বন্দিদের ফেরানো হোক।” এর আগে শুক্রবার ট্রাম্প জানান, যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চালানো মধ্যস্থতাকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনার পর তাঁর ধারণা, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।

ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয়, আর বেশিদিন নেই। আমি কয়েক জন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছি। মনে হচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই গাজা-ইসরাইল সংঘর্ষে সমঝোতা সম্ভব।”

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস দক্ষিণ ইসরাইলে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর তথ্য অনুযায়ী, এখনও হামাসের হাতে অন্তত ৫০ জন ইসরাইলি নাগরিক বন্দি রয়েছেন। ওই ঘটনার জেরে ইসরাইলও গাজায় পাল্টা সেনা অভিযান শুরু করে।

আরও পড়ুন: গাজা সংঘর্ষবিরতি: ট্রাম্পের আশ্বাস, ইসরাইলের হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা বাড়ছে

দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আংশিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। তবে মার্চ মাসে ইসরাইলের ফের আক্রমণে ভেঙে পড়ে সেই চুক্তি। এর ফলে গাজা-ইসরাইল শান্তি আলোচনা আবারও অনিশ্চয়তায় পড়ে।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের নতুন ডাকনাম ‘ড্যাডি’ ঘিরে বিতর্ক! ইরান-ইসরাইল সংঘাতের মধ্যেই কূটনৈতিক হুঁশিয়ারি

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, তারা আলোচনায় রাজি। তবে কিছু শর্ত রয়েছে, যেমন— অবিলম্বে যুদ্ধ থামাতে হবে এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। তবে তেল আবিব এই শর্ত মানার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছে।

আরও পড়ুন: আমেরিকার সঙ্গে আর আলোচনার জায়গা নেই : ইরান সুর নরম করে ছাড় ‘অফার’ ট্রাম্প প্রশাসনের 

এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে গাজায় গণহত্যা নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে। একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগ তুলেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বুভুক্ষু মানুষদের উপরও হামলা করছে ইসরাইলি সেনা।

শুধু গাজা নয়, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও প্যালেস্টিনীয়দের ঘরবাড়ি, জমিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইসরাইলি বসতকারীদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে।

এমন পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর সরকার ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়েছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরেও যুদ্ধবিরতির দাবিতে আন্দোলন, বিক্ষোভ বাড়ছে। বিরোধীরাও সরব হচ্ছেন।

তবে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, ইসরাইল সরকারের কৌশলগত মন্ত্রী রন ডারমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে গাজা পরিস্থিতি ও ইরান প্রসঙ্গেও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর হোয়াইট হাউসে যাওয়ার কথাও রয়েছে বলে খবর।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাজা-ইসরাইল যুদ্ধবিরতিতে আশার আলো, এক সপ্তাহের মধ্যে চুক্তির ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গাজা ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি শীঘ্রই হতে পারে—এমন আশাবাদী বার্তা দিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “গাজা নিয়ে চুক্তিটা এবার হোক। বন্দিদের ফেরানো হোক।” এর আগে শুক্রবার ট্রাম্প জানান, যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চালানো মধ্যস্থতাকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনার পর তাঁর ধারণা, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।

ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয়, আর বেশিদিন নেই। আমি কয়েক জন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছি। মনে হচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই গাজা-ইসরাইল সংঘর্ষে সমঝোতা সম্ভব।”

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস দক্ষিণ ইসরাইলে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর তথ্য অনুযায়ী, এখনও হামাসের হাতে অন্তত ৫০ জন ইসরাইলি নাগরিক বন্দি রয়েছেন। ওই ঘটনার জেরে ইসরাইলও গাজায় পাল্টা সেনা অভিযান শুরু করে।

আরও পড়ুন: গাজা সংঘর্ষবিরতি: ট্রাম্পের আশ্বাস, ইসরাইলের হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা বাড়ছে

দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আংশিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। তবে মার্চ মাসে ইসরাইলের ফের আক্রমণে ভেঙে পড়ে সেই চুক্তি। এর ফলে গাজা-ইসরাইল শান্তি আলোচনা আবারও অনিশ্চয়তায় পড়ে।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের নতুন ডাকনাম ‘ড্যাডি’ ঘিরে বিতর্ক! ইরান-ইসরাইল সংঘাতের মধ্যেই কূটনৈতিক হুঁশিয়ারি

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, তারা আলোচনায় রাজি। তবে কিছু শর্ত রয়েছে, যেমন— অবিলম্বে যুদ্ধ থামাতে হবে এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। তবে তেল আবিব এই শর্ত মানার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছে।

আরও পড়ুন: আমেরিকার সঙ্গে আর আলোচনার জায়গা নেই : ইরান সুর নরম করে ছাড় ‘অফার’ ট্রাম্প প্রশাসনের 

এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে গাজায় গণহত্যা নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে। একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগ তুলেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বুভুক্ষু মানুষদের উপরও হামলা করছে ইসরাইলি সেনা।

শুধু গাজা নয়, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও প্যালেস্টিনীয়দের ঘরবাড়ি, জমিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইসরাইলি বসতকারীদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে।

এমন পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর সরকার ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়েছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরেও যুদ্ধবিরতির দাবিতে আন্দোলন, বিক্ষোভ বাড়ছে। বিরোধীরাও সরব হচ্ছেন।

তবে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, ইসরাইল সরকারের কৌশলগত মন্ত্রী রন ডারমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে গাজা পরিস্থিতি ও ইরান প্রসঙ্গেও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর হোয়াইট হাউসে যাওয়ার কথাও রয়েছে বলে খবর।