ভারত কোনও ধর্মশালা নয়, আশ্রয় নয় উদ্বাস্তুদের: শীর্ষকোর্ট
- আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, সোমবার
- / 156
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ ভারত কোনও ধর্মশালা নয়। দুনিয়ার উদ্বাস্তুদের ভারতে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। এমনিতেই ১৪০ কোটির জনসংখ্যার ভারে ভারত জর্জরিত। ফলে আর উদ্বাস্তুদের চাপ নেওয়া সম্ভব নয়। এক মামলায় সোমবার এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিমকোর্ট।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে শুনানি চলছিল মামলাটির। মামলাটি করেছিলেন প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার এক তামিল নাগরিক। তিনি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই কারণে তাঁকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ ধারায় মামলা হয়। মাদ্রাজ হাইকোর্ট তাঁকে ৭ বছরের কারাদণ্ডর নির্দেশ দিয়েছিল। সাজা শেষ হলে ভারত ছাড়ারও নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন ওই শ্রীলঙ্কার তামিল ব্যক্তি।
শীর্ষ আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল (শ্রীলঙ্কার ওই নাগরিক) ভিসা নিয়েই ভারতে এসেছিলেন। এখন শ্রীলঙ্কায় ফেরত পাঠানো হলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে। তাঁর মক্কেল একজন শরণার্থী। সেই সূত্র ধরেই সে তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে এখানে রয়েছে। ওই আইনজীবী দাবি করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী, সন্তানরা যেহেতু এ দেশে বসবাস করেন তাই তাঁকেও ভারতে থাকতে দেওয়া হোক। যদিও আইনজীবীর এই মন্তব্যে সায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘ভারত কি গোটা বিশ্বের উদ্বাস্তুদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে? আমাদের নিজেদেরই ১৪০ কোটি (জনসংখ্যা) রয়েছে। এটা কোনও ধর্মশালা নয় যে আমরা গোটা বিশ্বের বিদেশি নাগরিকদের জন্য ব্যবস্থা করব।’ তখন ওই ব্যক্তির আইনজীবী আদালতকে বলেন, তাঁর মক্কেলকে সাজা শেষ হওয়ার পরেও গত তিন বছর ধরে নির্বাসনে রেখে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তাঁর মক্কেল একজন শরণার্থী। স্ত্রী, সন্তানকে নিয়ে এখানেই রয়েছেন।
এখন শ্রীলঙ্কায় ফেরত পাঠানো হলে তাঁর মক্কেলের প্রাণ সংশয় হতে পারে। যদিও আইনজীবীর এই বক্তব্যর সঙ্গে সহমত হতে পারেননি বিচারপতিরা। বিচারপতি দত্ত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, ‘যাঁরা এ দেশের নাগরিক, সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে একমাত্র তাঁদেরই ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসের মৌলিক অধিকার রয়েছে।’ মামলাকারীকে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হলে প্রাণের ঝুঁকি হতে পারে সে সম্পর্কে শীর্ষকোর্ট বলেছে, তাহলে তাঁর মক্কেল অন্য কোনও দেশে যেতে পারেন। বিশ্বের সমস্ত উদ্বাস্তু এখানে আশ্রয় নিতে পারেন না।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় তামিলরা জাতিগত বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধের সময় শ্রীলঙ্কান তামিলদের উপর দীর্ঘস্থায়ী নিপীড়ন চলে বলে অভিযোগ।