২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদ্রাসা মামলায় সিআইডিকে তদন্তভার দিতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়? 

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৩১ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 30

পারিজাত মোল্লা,  কলকাতা:  শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভুমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিশ্বজিৎ বসু। সম্প্রতি এক দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সিআইডির ডিআইজি কে তদন্তভার দিয়েছেন। এবার তাতে নবতম সংযোজন হিসাবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রাজ্যের সিআইডি ডিআইজিকে তদন্তভার কেন নয়?

আরও পড়ুন: যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজার প্রয়োজনে আনতে বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

মাদ্রাসা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন সেই প্রশ্নই তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি জানান, ”সিবিআইয়ের হাতে এখন অনেক মামলা রয়েছে। অফিসারের অভাব রয়েছে।সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া যেতেই পারে। প্রয়োজনে আদালত নজরদারি করবে।’

আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে দুই পাকিস্থানি!  তদন্তে সিআইডি

তিনি আরও বলেন, ”নিয়োগ দুর্নীতির অনেক মামলাতেই তো সিবিআই তদন্ত করছে। কিন্তু তারা মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করতে পারল না কেন? কেন দেরি হল? ওই সময়ে তিনি তো সুপ্রিম কোর্টে চলে গেলেন।”

আরও পড়ুন: অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে রিপোর্ট তলব করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

যদিও মামলকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এজলাসে জানান,  সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ে বলা হয়েছে সরকারের উপরমহল থেকে কোনও অনিয়ম হলে সিআইডির পরিবর্তে সিবিআইকে সরাসরি তদন্ত করতে দেওয়া যেতে পারে’।  ওই আইনজীবী আরও বলেন , ”মাদ্রাসার নিয়োগেও সরকারের মন্ত্রী আমলারা যুক্ত।

যেখানে পুলিশকে রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সেই কারণেই এই তদন্তের ভারও সিবিআইকে দেওয়া উচিত।”

এদিন বিচারপতির  পর্যবেক্ষণ,  নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য এক মামলায় আদালত সিআইডিকে তদন্তভার দিয়েছে’।

যদিও মঙ্গলবার এই মামলায় তদন্তভার নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। দু’সপ্তাহ পর মামলাটি ফের শুনানি রয়েছে। আদালত সুত্রে প্রকাশ গত অগস্টে মাদ্রাসা কমিশনের বিরুদ্ধে উত্তরপত্রে ‘জালিয়াতি ‘ করার অভিযোগ এনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আব্দুল হামিদ নামে এক পরীক্ষার্থী। মাদ্রাসা নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তরপত্র বাতিল হওয়ার পরেই তিনি আদালতে মামলা করেন। ইচ্ছা করে অন্য কলমের কালি ব্যবহার করে তাঁর উত্তরপত্র বাতিল করে দেওয়া হয় বলে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি।

মামলাকারী হামিদের অভিযোগ, পরীক্ষা দেওয়ার পর অন্য কেউ তাঁর উত্তরপত্রে  জালিয়াতি করেছেন। তিনি যে কালো কালির কলমে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, সেটিও তিনি মামলা করার পর আদালতে জমা দিয়েছিলেন। এর পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই মামলাকারী পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র এবং কলম ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।

ফরেন্সিক তদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে, দু’টি ভিন্ন কালির কলম ব্যবহার করা হয়েছিল উত্তর লেখার সময়ে। তবে একই ব্যক্তি এই কাজ করেছেন কি না?  তা নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলেও রিপোর্টে লেখা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই মামলারই শুনানি চলাকালীনই সিআইডি ডিআইজিকে কেন তদন্তভার দেওয়া যাবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানির সময় তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক সিবিআই আধিকারিকের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সিবিআই আধিকারিকের নাম সোমনাথ বিশ্বাস। তিনি প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় তৈরি সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্য। মঙ্গলবার সোমনাথের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ”সিবিআইয়ের সিট থেকে সোমনাথ বিশ্বাসকে বাদ দিতে হবে। দুপুর ২টোর মধ্যে নতুন অফিসারের নামও জানাতে হবে সিবিআইকে।”

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মাদ্রাসা মামলায় সিআইডিকে তদন্তভার দিতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়? 

আপডেট : ৩১ জানুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার

পারিজাত মোল্লা,  কলকাতা:  শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভুমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিশ্বজিৎ বসু। সম্প্রতি এক দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সিআইডির ডিআইজি কে তদন্তভার দিয়েছেন। এবার তাতে নবতম সংযোজন হিসাবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রাজ্যের সিআইডি ডিআইজিকে তদন্তভার কেন নয়?

আরও পড়ুন: যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজার প্রয়োজনে আনতে বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

মাদ্রাসা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন সেই প্রশ্নই তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি জানান, ”সিবিআইয়ের হাতে এখন অনেক মামলা রয়েছে। অফিসারের অভাব রয়েছে।সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া যেতেই পারে। প্রয়োজনে আদালত নজরদারি করবে।’

আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে দুই পাকিস্থানি!  তদন্তে সিআইডি

তিনি আরও বলেন, ”নিয়োগ দুর্নীতির অনেক মামলাতেই তো সিবিআই তদন্ত করছে। কিন্তু তারা মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করতে পারল না কেন? কেন দেরি হল? ওই সময়ে তিনি তো সুপ্রিম কোর্টে চলে গেলেন।”

আরও পড়ুন: অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে রিপোর্ট তলব করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

যদিও মামলকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এজলাসে জানান,  সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ে বলা হয়েছে সরকারের উপরমহল থেকে কোনও অনিয়ম হলে সিআইডির পরিবর্তে সিবিআইকে সরাসরি তদন্ত করতে দেওয়া যেতে পারে’।  ওই আইনজীবী আরও বলেন , ”মাদ্রাসার নিয়োগেও সরকারের মন্ত্রী আমলারা যুক্ত।

যেখানে পুলিশকে রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সেই কারণেই এই তদন্তের ভারও সিবিআইকে দেওয়া উচিত।”

এদিন বিচারপতির  পর্যবেক্ষণ,  নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য এক মামলায় আদালত সিআইডিকে তদন্তভার দিয়েছে’।

যদিও মঙ্গলবার এই মামলায় তদন্তভার নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। দু’সপ্তাহ পর মামলাটি ফের শুনানি রয়েছে। আদালত সুত্রে প্রকাশ গত অগস্টে মাদ্রাসা কমিশনের বিরুদ্ধে উত্তরপত্রে ‘জালিয়াতি ‘ করার অভিযোগ এনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আব্দুল হামিদ নামে এক পরীক্ষার্থী। মাদ্রাসা নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তরপত্র বাতিল হওয়ার পরেই তিনি আদালতে মামলা করেন। ইচ্ছা করে অন্য কলমের কালি ব্যবহার করে তাঁর উত্তরপত্র বাতিল করে দেওয়া হয় বলে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি।

মামলাকারী হামিদের অভিযোগ, পরীক্ষা দেওয়ার পর অন্য কেউ তাঁর উত্তরপত্রে  জালিয়াতি করেছেন। তিনি যে কালো কালির কলমে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, সেটিও তিনি মামলা করার পর আদালতে জমা দিয়েছিলেন। এর পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই মামলাকারী পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র এবং কলম ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।

ফরেন্সিক তদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে, দু’টি ভিন্ন কালির কলম ব্যবহার করা হয়েছিল উত্তর লেখার সময়ে। তবে একই ব্যক্তি এই কাজ করেছেন কি না?  তা নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলেও রিপোর্টে লেখা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই মামলারই শুনানি চলাকালীনই সিআইডি ডিআইজিকে কেন তদন্তভার দেওয়া যাবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানির সময় তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক সিবিআই আধিকারিকের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সিবিআই আধিকারিকের নাম সোমনাথ বিশ্বাস। তিনি প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় তৈরি সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্য। মঙ্গলবার সোমনাথের নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ”সিবিআইয়ের সিট থেকে সোমনাথ বিশ্বাসকে বাদ দিতে হবে। দুপুর ২টোর মধ্যে নতুন অফিসারের নামও জানাতে হবে সিবিআইকে।”