০৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বাড়ছে থারুরের

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 58

সমালোচনা, ট্রোলে আপত্তি নেই শশীর

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: শশীর সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়ছে বলে দীর্ঘ সময় ধরেই জল্পনা চলছে দিল্লিতে। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিরোধী শিবিরের বাকি নেতারা সেনাবাহিনীর প্রশংসা করলেও, শশী এককদম এগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।

অন্যদিকে বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনওয়ালা বলেছেন, একদিকে কংগ্রেস দেশ এবং তার সেনাবাহিনীকে সমর্থন করছে, আর একদিকে তারা সেই সেনাবাহিনীকেই অপমান করছে এবং অপারেশন সিঁদুরকে ‘অপারেশন ব্লুস্টার’ বলে অভিহিত করছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানিদের প্রতি কলম্বিয়ার সমবেদনা! ক্ষোভ উগরে দিলেন শশী থারুর

শশী থারুরের বর্তমান প্রেক্ষিতে তিনি কি ক্রমশ বিজেপির দিক ঝুঁকে পড়ছেন, এমন জল্পনাও চলছে। কংগ্রেসের আপত্তি সত্ত্বেও তাকে বিদেশে প্রতিনিধি করে পাঠানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলেরই একাংশের সমালোচনার জবাব দিলেন শশী থারুর। পানামায় গিয়ে সন্ত্রাস রুখতে ভারতের নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: শহিদ ঝন্টু শেখের পরিবারের পাশে কংগ্রেস

তা নিয়ে তাকে ‘বিজেপির সুপার মুখপাত্র’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন কংগ্রেস নেতা উদিত রাজ। বৃহস্পতিবার শশী বলেন, সমালোচকেরা আমার কথা বিকৃত করতেই পারেন। তবে আমার সত্যি আরও ভালো কাজ করার আছে। ট্রোল, সমালোচনাতে তার আপত্তি নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে আবার তার পাশে দাঁড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি বলেন, কংগ্রেস কি আশা করছে বিদেশে গিয়ে ভারতের প্রতিনিধি দেশ ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বলবে!

আরও পড়ুন: ফের বিপাকে রাহুল গান্ধি! জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

অপারেশন সিঁদুরের পরে পৃথিবীর নানা দেশে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে মোদি সরকার। তারই একটিতে রয়েছেন শশী। তার দাবি, পানামার সফর শেষ করে ছ’ঘণ্টার মধ্যে কলম্বিয়ার বোগোটায় রওনা হতে হবে তাকে। তিনি স্পষ্ট করে দেন, শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদীদের হামলার প্রতিশোধের কথা বলেছিলেন তিনি। পূর্ববর্তী যুদ্ধে ভারতের অবস্থানের সঙ্গে এটাকে এক করে দেখার কথা নয়।

বিশ্বমঞ্চে সন্ত্রাসের পর্দা ফাঁস করতে সর্বদলের প্রতিনিধিরা বিদেশ সফর করছেন। যেখানে কংগ্রেসের শশী থারুর থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিরা রয়েছেন। বিশ্ব মঞ্চে সন্ত্রাসবাদের মুখোশ যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা টেনে খুলছেন, সেই সময় কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই শশী থারুরকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা উদিত রাজ বলেছেন, কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এখন বিজেপির সুপার মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন। বিজেপি নেতারা যা বলছেন না, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং সরকারের পক্ষে সেই কথা বলছেন শশী থারুর। রাজ বলেন, আগের সরকার কী করত, তা কি আদৌ জানেন উনি? এখন সেনার কাজের কৃতিত্বে ভাগ বসানো হচ্ছে। আগের সরকার এখনকার মতো ছিল না। এই সরকার কিছুই করে না, কিন্তু সবের কৃতিত্ব দাবি করে। শশী থারুর বিজেপির প্রচারের মুখ হয়ে উঠেছেন, তাদের মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। কংগ্রেস আগেই জানিয়েছিল, ইউপিএ আমলে ছ’বার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল। কিন্তু দেশের নিরাপত্তার জন্য স্পর্শকাতর বলেই সেই তথ্য সামনে আনা হয়নি।

প্রসঙ্গত, অপারেশন সিঁদুরের প্রশংসায় শশীকে বলতে শোনা যায়, আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন অপারেশন সিঁদুর চালাতেই হত। ২৬ মহিলার কপালের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল, তাদের স্বামী ছিনিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা। মহিলারা তাদেরও মেরে ফেলতে বলেছিলেন জঙ্গিদের। কিন্তু তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়, যাতে এসে কী ঘটেছে বলতে পারেন। আমরা ওদের কান্না শুনেছি। আর তাই আমাদের মেয়েদের মাথা সিঁদুরের লাল রংয়ের সঙ্গে হত্যাকারী, হামলাকারীদের রক্তের লাল রং মিলিয়ে দেওয়া সঙ্কল্প নিই।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বাড়ছে থারুরের

আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার

সমালোচনা, ট্রোলে আপত্তি নেই শশীর

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: শশীর সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়ছে বলে দীর্ঘ সময় ধরেই জল্পনা চলছে দিল্লিতে। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিরোধী শিবিরের বাকি নেতারা সেনাবাহিনীর প্রশংসা করলেও, শশী এককদম এগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।

অন্যদিকে বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনওয়ালা বলেছেন, একদিকে কংগ্রেস দেশ এবং তার সেনাবাহিনীকে সমর্থন করছে, আর একদিকে তারা সেই সেনাবাহিনীকেই অপমান করছে এবং অপারেশন সিঁদুরকে ‘অপারেশন ব্লুস্টার’ বলে অভিহিত করছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানিদের প্রতি কলম্বিয়ার সমবেদনা! ক্ষোভ উগরে দিলেন শশী থারুর

শশী থারুরের বর্তমান প্রেক্ষিতে তিনি কি ক্রমশ বিজেপির দিক ঝুঁকে পড়ছেন, এমন জল্পনাও চলছে। কংগ্রেসের আপত্তি সত্ত্বেও তাকে বিদেশে প্রতিনিধি করে পাঠানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলেরই একাংশের সমালোচনার জবাব দিলেন শশী থারুর। পানামায় গিয়ে সন্ত্রাস রুখতে ভারতের নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: শহিদ ঝন্টু শেখের পরিবারের পাশে কংগ্রেস

তা নিয়ে তাকে ‘বিজেপির সুপার মুখপাত্র’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন কংগ্রেস নেতা উদিত রাজ। বৃহস্পতিবার শশী বলেন, সমালোচকেরা আমার কথা বিকৃত করতেই পারেন। তবে আমার সত্যি আরও ভালো কাজ করার আছে। ট্রোল, সমালোচনাতে তার আপত্তি নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে আবার তার পাশে দাঁড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি বলেন, কংগ্রেস কি আশা করছে বিদেশে গিয়ে ভারতের প্রতিনিধি দেশ ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বলবে!

আরও পড়ুন: ফের বিপাকে রাহুল গান্ধি! জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

অপারেশন সিঁদুরের পরে পৃথিবীর নানা দেশে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে মোদি সরকার। তারই একটিতে রয়েছেন শশী। তার দাবি, পানামার সফর শেষ করে ছ’ঘণ্টার মধ্যে কলম্বিয়ার বোগোটায় রওনা হতে হবে তাকে। তিনি স্পষ্ট করে দেন, শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদীদের হামলার প্রতিশোধের কথা বলেছিলেন তিনি। পূর্ববর্তী যুদ্ধে ভারতের অবস্থানের সঙ্গে এটাকে এক করে দেখার কথা নয়।

বিশ্বমঞ্চে সন্ত্রাসের পর্দা ফাঁস করতে সর্বদলের প্রতিনিধিরা বিদেশ সফর করছেন। যেখানে কংগ্রেসের শশী থারুর থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিরা রয়েছেন। বিশ্ব মঞ্চে সন্ত্রাসবাদের মুখোশ যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা টেনে খুলছেন, সেই সময় কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই শশী থারুরকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা উদিত রাজ বলেছেন, কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এখন বিজেপির সুপার মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন। বিজেপি নেতারা যা বলছেন না, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং সরকারের পক্ষে সেই কথা বলছেন শশী থারুর। রাজ বলেন, আগের সরকার কী করত, তা কি আদৌ জানেন উনি? এখন সেনার কাজের কৃতিত্বে ভাগ বসানো হচ্ছে। আগের সরকার এখনকার মতো ছিল না। এই সরকার কিছুই করে না, কিন্তু সবের কৃতিত্ব দাবি করে। শশী থারুর বিজেপির প্রচারের মুখ হয়ে উঠেছেন, তাদের মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। কংগ্রেস আগেই জানিয়েছিল, ইউপিএ আমলে ছ’বার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল। কিন্তু দেশের নিরাপত্তার জন্য স্পর্শকাতর বলেই সেই তথ্য সামনে আনা হয়নি।

প্রসঙ্গত, অপারেশন সিঁদুরের প্রশংসায় শশীকে বলতে শোনা যায়, আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন অপারেশন সিঁদুর চালাতেই হত। ২৬ মহিলার কপালের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল, তাদের স্বামী ছিনিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা। মহিলারা তাদেরও মেরে ফেলতে বলেছিলেন জঙ্গিদের। কিন্তু তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়, যাতে এসে কী ঘটেছে বলতে পারেন। আমরা ওদের কান্না শুনেছি। আর তাই আমাদের মেয়েদের মাথা সিঁদুরের লাল রংয়ের সঙ্গে হত্যাকারী, হামলাকারীদের রক্তের লাল রং মিলিয়ে দেওয়া সঙ্কল্প নিই।