মধ্যপ্রাচ্যে চলতি সংঘর্ষে ভারতে জ্বালানির অভাব হবে না: হরদীপ পুরী

- আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 25
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গত দশদিন ধরে চলেছে ইরান-ইজরাইল সংঘর্ষ। ইজরাইলের আক্রমণে পাল্টা জবাব দেয় ইরান। এর মধ্যে রবিবার ইরান-ইসরাইলের যুদ্ধে প্রবেশ ঘটে আমেরিকার। রবিবার কাকভোরে ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়।
ফোরদো, নাতানজ, ইসফাহান ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বাঙ্কার বোমা দিয়ে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম নিজের সোশাল মিডিয়া ট্রুথে জানায়। ইরানে বোমারু বিমান দিয়ে হামলা চালানোর গোটা প্রক্রিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স পর্যালোচনা করেন। সেই ছবিও পেন্টাগনের তরফে প্রকাশ করা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের আবহের মাঝেই হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। হরমুজ প্রণালী দিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপের ২০-২৫ শতাংশ তেল সরবরাহ করা হয়। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বিশ্বের বাজারে তেলের ঘাটতি দেখা যাবে। তার আঁচ ভারতেও পড়তে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন। তবে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী তেল নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন। ভারতে এর প্রভাব পড়বে না বলেই জানিয়েছেন তিনি।
পেট্রোলিয়াম সংরক্ষণ কেন্দ্রে তৈরির কথা এদিন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী জানান। বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়লে জাতীয় তেল কোম্পানিগুলিতে এই রিজার্ভার থেকে তেল সরবরাহ করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। পুদুরে তেল সংরক্ষণাগারের ক্ষমতা ২.২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন, বিশাখাপত্তনমের ধারনক্ষমতা ১.৩৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন এবং ম্যাঙ্গালোর সংরক্ষণাগারের ১.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তেল ধারনের ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া ওড়িশার চান্দিখোলায় একটি নতুন সংরক্ষণাগার খোলার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী।
ভারতের দৈনিক মোট ৫.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের প্রয়োজন হয়। যার মধ্যে প্রায় ২ মিলিয়ন ব্যারেল এই পথ দিয়েই ভারতে আসে। তবে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী পুরী জানিয়েছেন, জ্বালানি আসার এটিই একমাত্র পথ নয়। ভারতের জ্বালানি আমদানির পথ এখন বহুমুখী।
রবিবার এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে লেখেন, “বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতের জ্বালানি শুধুমাত্র হরমুজ প্রণালী দিয়েই ভারতে আসে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মদির নেতৃত্বে আমাদের জ্বালানি সরবরহের পথ এখন বহুমুখী”।
তিনি আরও লেখেন, “আমাদের অয়েল মার্কেটিং কোম্পানিগুলো বেশ কয়েকদিনের তেল মজুত করে রেখেছে। তাঁরা প্রতিনিয়ত নানান রুট দিয়ে সরবরাহ করছে। ভবিষ্যতে দেশবাসীর কাছে পর্যাপ্ত জ্বালানি পৌঁছে দিতে যা পদক্ষেপ নেওয়ার তা আমরা নেব।”
তিনি বলেছেন, হরমুজ প্রণালীর ওপর আমাদের নির্ভরতা অনেকটাই কম। ভারতে এখন রাশিয়া, আমেরিকা ও ব্রাজিল থেকেও তেলের আমদানি করছে। রাশিয়ার তেল আমদানি হয় সুয়েজ খাল, গুড হোপ প্রণালী ও প্রশান্ত মহাসাগার রুট দিয়ে। হরমুজ প্রণালীর থেকে এই পথ গুলি একেবারেই আলাদা।
হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ তেল সরবরাহ বন্ধ হবে। এর ফলে জ্বালানির দাম বেড়ে ব্যারেল প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ ডলারে পৌঁছোবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে যা প্রবলভাবে ধস নামতে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
রবিবার ইরানের হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। প্রায় ৪৫ মিনিট দুজন কথা বলেন। ইরানে আমেরিকার হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে মোদি শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেন।