বাংলাদেশের রবীন্দ্রনাথের বাড়ি ভাঙা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার, চাইলেন হস্তক্ষেপ

- আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার
- / 53
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বসতবাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনাকে ‘জাতীয় গর্ব ও উপমহাদেশের সাংস্কৃতি ঐতিহ্যের ওপর বর্বরোচিত আঘাত’ বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠালেন তিনি। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমি সিরাজগঞ্জে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহাসিক পৈতৃক বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় আমার গভীর বেদনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। এই বাড়িটি নিছক একটি স্থাপত্য নয়, এটি আমাদের উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের এক অমর স্মারক। কবিগুরুর বহু কালজয়ী সৃষ্টি এই বাড়ির প্রাঙ্গণেই রচিত হয়েছে। সেই সূত্রে এই বাড়ি ভাঙচুর শুধুমাত্র এক কাঠামো ধ্বংস নয়, বরং তা একটি যুগান্তকারী শিল্প-সাহিত্যিক উত্তরাধিকার নিঃসংশয়ে আঘাত।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, এই ঘটনা শুধু বাংলার মানুষকেই নয়, সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ ও বিশ্বের সমস্ত রবীন্দ্রভক্তদের আহত করেছে। রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র একজন কবি নন, তিনি বাঙালি জাতির আত্মার প্রতিচ্ছবি। তাঁর সাহিত্য, দর্শন ও মানবতাবাদী ভাবনা বিশ্বসভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছে। এই ধরনের এক মহান ব্যক্তিত্বের স্মৃতি-বিজড়িত স্থান এভাবে নষ্ট করে দেওয়া এক অসভ্যতা, যার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ হওয়া উচিত।
চিঠিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন যেন ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিবেশী দেশের সরকারের কাছে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একই সঙ্গে তিনি পরামর্শ দেন, এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য আন্তর্জাতিক স্তরে একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করুক ভারত।
তিনি লেখেন, ‘যদিও অপূরণীয় ক্ষতি ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে, তবে একটি জোরদার আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলা আটকাতে অন্তত কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। রবীন্দ্রনাথ কেবলমাত্র বাংলার গর্ব নন, তিনি গোটা বিশ্বের সম্পদ।’
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি-বিজড়িত পৈতৃক বাড়িতে অজ্ঞাতপরিচয় দুস্কৃতীরা ভাঙচুর চালায়। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত কাছারিবাড়িতে দুস্কৃতীরা অবাধে ভাঙচুর চালানোর সেই খবর বাংলাদেশি মিডিয়াতেই প্রকাশ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, আপাতত কাছারিবাড়িতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জানা গিয়েছে, কাছারিবাড়িতে হামলার জেরে বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্রের ক্ষতি হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় ইউনূসের দেশের পুলিশ স্বভাবতই নিষ্ক্রিয়। ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে খবরের চ্যানেলে দেখা গেলেও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি এখনও।
মূলত এই নিয়েই একদিন ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন দেখার এই চিঠির পর ভারতবর্ষের তরফ থেকে এই নিয়ে ইউনূস সরকারকে কোনও বার্তা দেওয়া হয় কি না!