আইআইএম জোকা ক্যাম্পাসে ধর্ষণের অভিযোগে চাঞ্চল্য, অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র গ্রেফতার

- আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, শনিবার
- / 192
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দেশের অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইএম জোকায় ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার মূল অভিযুক্ত, প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পরমানন্দ ওরফে রাহুল জৈনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১২৪/৬৪ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি, আরও চারজনের নাম উঠে এসেছে এই ঘটনায়। তাঁদের মধ্যে একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ঘটনাটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, আক্রান্ত তরুণী দাবি করেছেন— পরমানন্দ তাঁকে ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় ভিজিটর রেজিস্টারে নাম লিখতে দেননি। অথচ ঘটনাকালীন দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষী বিষয়টি নজরে আনেননি। কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল’কলেজে সদ্য ঘটে যাওয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা বাড়াতে আলাদা এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) জারি করা হয়েছিল। তবু, আইআইএম জোকার মতো একটি প্রতিষ্ঠানে কেন রেজিস্ট্রার সংক্রান্ত নিয়ম মানা হয়নি, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, তদন্তে এক নিরাপত্তারক্ষীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ছাত্র এর আগেও ওই তরুণীকে একইভাবে ডেকে অনৈতিক কাজের চেষ্টা করেছিলেন। অভিযোগপত্রে তরুণী জানিয়েছেন, কাউন্সেলিং সেশনের অজুহাতে রাহুল তাঁকে সেদিন জোকা ক্যাম্পাসে ডেকেছিলেন। পেশাগত সূত্রে দু’জনের মধ্যে কয়েকদিনের আলাপ হয়েছিল। কিন্তু সেশন কক্ষে না নিয়ে, অভিযুক্ত তাঁকে ছেলেদের হস্টেলের দিকে নিয়ে যান। দাবি করেন, একটি জরুরি জিনিস সংগ্রহ করতে হবে।
সেই হস্টেল ঘরে গিয়ে তরুণীকে পিৎজা খেতে দেন অভিযুক্ত, সঙ্গে একটি পানীয় জলও। জলটি পান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি প্রায় অচেতন হয়ে পড়েন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই পানীয় জলে মাদক মেশানো ছিল। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনায় আইআইএম কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি। তবে সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে, কীভাবে দেশের এক শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে এমন নিরাপত্তা লঙ্ঘন সম্ভব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিরাপত্তা এবং নারী সুরক্ষাকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এই ঘটনা। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে এবং প্রয়োজন হলে আরও ব্যক্তিকে জেরা করা হবে।