২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিজাব নিষিদ্ধ ‘অমানবিক’, ‘অসাংবিধানিক’ মুসলিম ছাত্রীদের সমর্থন রাহুলের

মাসুদ আলি
  • আপডেট : ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, শনিবার
  • / 20

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও’ স্লোগান দিয়েছিলেন মোদিজি ।অথচ বিজেপি শাসিত কর্ণাটক  পড়তে দেওয়া হচ্ছে না ‘বেটিদের’ই।তাদের অপরাধ তারা শালীন হিজাবে নিজেদের আবৃত করেছে।বারবার অনুরোধ করার পরও হিজাবি ছাত্রীদের ক্লাস করতে দেওয়া হয়নি।শেষ পর্যন্ত তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।

কর্ণাটক কংগ্রেস হিজাবি  ছাত্রীদের কলেজ প্রবেশে বাধাকে ‘অমানবিক ও অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেছে। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি ছাত্রীদের সমর্থন করেছেন।তিনি বলেছেন,’ভারতের মেয়েদের ভবিষ্যত ছিনতাই’ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ইরানের সার্বভৌমত্বের উপর হামলার নিন্দা, কেন্দ্রকে কটাক্ষ কংগ্রেসের

কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে যে ইস্যু তৈরি করা হয়েছে, তা আসলে সংক্রামিত হচ্ছে বিজেপি শাসিত গোটা কর্ণাটকজুড়ে। একের  এক সরকারি কলেজ হিজাব নিষিদ্ধ করে শাসকদলকে খুশি করতে চেষ্টা করছে।এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস উদুপি জেলার কুন্দপুর কলেজের প্রিন্সিপালের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে। এই অধ্যক্ষ কিভাবে হিজাব পরিহিতা ছাত্রীদের মুখের সামনে কলেজের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন তা সোশ্যাল সাইটে সকলে দেখেছে।রাহুল গান্ধী টুইটে বলেছেন,হিজাবকে ইস্যু করে আমরা ভারতের মেয়েদের ভবিষ্যৎ কেড়ে নিচ্ছি। মা সরস্বতী সকলকে জ্ঞান দান করেন। তিনি কাউকে আলাদা করেন না।

আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীকে লেখা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন: অভিযোগ থাকলে নির্দিষ্টভাবে জানান

ইসলামে হিজাবের কথা রয়েছে। কিন্তু হিন্দুধর্মে গেরুয়া সালের উল্লেখ নেই। হিজাবের দাবিকে নস্যাৎ করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গেরুয়া শাল ইস্যুকে তুলে আনা হচ্ছে। এর আগে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর, জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া হিজাব বন্ধের পিছনের বিজেপির মদদ দেখছেন।

বিধায়ক রঘুপতি ভাট বলেছেন কলেজ ম্যানেজমেন্ট কি ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক করেছে ? এটা সরকারি কলেজ। কলেজের অধ্যক্ষ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন পান। অথচ তিনি প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিধায়কের নির্দেশে গেট বন্ধ করে দিচ্ছেন । এই কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণ করা উচিত।”

‘এটিকে রাজনৈতিক মোড় দেওয়া হচ্ছে।বিজেপি ছাত্রদের গেরুয়া শাল পরানো হচ্ছে ইস্যু করার জন্য।  এত দিন তারা কেউ গেরুয়ায় শাল পরেনি? অথচ বহু বছর ধরে ছাত্রীরা হিজাব পরছে ।এটা সংবিধানে স্বীকৃত অধিকার । আপনারা কেন এটি বন্ধ করার চেষ্টা করছেন?’প্রশ্ন সিদ্দারামাইয়ার ।

কর্ণাটকের বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিজেপি প্রধান নলিন কুমার কাটিল বলেছেন তারা, শিক্ষাক্ষেত্রে ‘তালেবানীকরণ’ হতে দেবেন না।বিজয়পুরার বিজেপি বিধায়ক বাসনাগৌড়া পাতিল  ইয়াতনাল বলেছেন, কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবে ক্লাসরুমে হিজাব পরার অনুমতি দাবি করছে।তাঁর দাবি “একবার সেই দাবি পূরণ হলে, তারা বোরকা পরার অনুমতি চাইবে এবং তারপরে স্কুলের ভিতরে মসজিদ নির্মাণের দাবি জানাবে। যে বিজেপি নেতারা শিক্ষাক্ষেত্রে তালিবানীকরণের অভিযোগ করছেন, তারাই শিক্ষাঙ্গনে সরস্বতী পুজোকে এদেশের সংস্কৃতি বলে দাবি করছেন।

কংগ্রেস বিধায়ক কানিজ ফাতিমার নেতৃত্বে মুসলিম পড়ুয়ারা হিজাব পরার দাবিতে প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান।  তাঁরা স্লোগান দেন, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস। গুণ্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।’ বিধায়ক ফাতিমা বলেন, তিনি কর্ণাটক বিধানসভায় হিজাবের অনুমতির বিষয়টি উত্থাপন করবেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হিজাব নিষিদ্ধ ‘অমানবিক’, ‘অসাংবিধানিক’ মুসলিম ছাত্রীদের সমর্থন রাহুলের

আপডেট : ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও’ স্লোগান দিয়েছিলেন মোদিজি ।অথচ বিজেপি শাসিত কর্ণাটক  পড়তে দেওয়া হচ্ছে না ‘বেটিদের’ই।তাদের অপরাধ তারা শালীন হিজাবে নিজেদের আবৃত করেছে।বারবার অনুরোধ করার পরও হিজাবি ছাত্রীদের ক্লাস করতে দেওয়া হয়নি।শেষ পর্যন্ত তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।

কর্ণাটক কংগ্রেস হিজাবি  ছাত্রীদের কলেজ প্রবেশে বাধাকে ‘অমানবিক ও অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেছে। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি ছাত্রীদের সমর্থন করেছেন।তিনি বলেছেন,’ভারতের মেয়েদের ভবিষ্যত ছিনতাই’ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ইরানের সার্বভৌমত্বের উপর হামলার নিন্দা, কেন্দ্রকে কটাক্ষ কংগ্রেসের

কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে যে ইস্যু তৈরি করা হয়েছে, তা আসলে সংক্রামিত হচ্ছে বিজেপি শাসিত গোটা কর্ণাটকজুড়ে। একের  এক সরকারি কলেজ হিজাব নিষিদ্ধ করে শাসকদলকে খুশি করতে চেষ্টা করছে।এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস উদুপি জেলার কুন্দপুর কলেজের প্রিন্সিপালের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে। এই অধ্যক্ষ কিভাবে হিজাব পরিহিতা ছাত্রীদের মুখের সামনে কলেজের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন তা সোশ্যাল সাইটে সকলে দেখেছে।রাহুল গান্ধী টুইটে বলেছেন,হিজাবকে ইস্যু করে আমরা ভারতের মেয়েদের ভবিষ্যৎ কেড়ে নিচ্ছি। মা সরস্বতী সকলকে জ্ঞান দান করেন। তিনি কাউকে আলাদা করেন না।

আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীকে লেখা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন: অভিযোগ থাকলে নির্দিষ্টভাবে জানান

ইসলামে হিজাবের কথা রয়েছে। কিন্তু হিন্দুধর্মে গেরুয়া সালের উল্লেখ নেই। হিজাবের দাবিকে নস্যাৎ করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গেরুয়া শাল ইস্যুকে তুলে আনা হচ্ছে। এর আগে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর, জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া হিজাব বন্ধের পিছনের বিজেপির মদদ দেখছেন।

বিধায়ক রঘুপতি ভাট বলেছেন কলেজ ম্যানেজমেন্ট কি ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক করেছে ? এটা সরকারি কলেজ। কলেজের অধ্যক্ষ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন পান। অথচ তিনি প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিধায়কের নির্দেশে গেট বন্ধ করে দিচ্ছেন । এই কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণ করা উচিত।”

‘এটিকে রাজনৈতিক মোড় দেওয়া হচ্ছে।বিজেপি ছাত্রদের গেরুয়া শাল পরানো হচ্ছে ইস্যু করার জন্য।  এত দিন তারা কেউ গেরুয়ায় শাল পরেনি? অথচ বহু বছর ধরে ছাত্রীরা হিজাব পরছে ।এটা সংবিধানে স্বীকৃত অধিকার । আপনারা কেন এটি বন্ধ করার চেষ্টা করছেন?’প্রশ্ন সিদ্দারামাইয়ার ।

কর্ণাটকের বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিজেপি প্রধান নলিন কুমার কাটিল বলেছেন তারা, শিক্ষাক্ষেত্রে ‘তালেবানীকরণ’ হতে দেবেন না।বিজয়পুরার বিজেপি বিধায়ক বাসনাগৌড়া পাতিল  ইয়াতনাল বলেছেন, কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবে ক্লাসরুমে হিজাব পরার অনুমতি দাবি করছে।তাঁর দাবি “একবার সেই দাবি পূরণ হলে, তারা বোরকা পরার অনুমতি চাইবে এবং তারপরে স্কুলের ভিতরে মসজিদ নির্মাণের দাবি জানাবে। যে বিজেপি নেতারা শিক্ষাক্ষেত্রে তালিবানীকরণের অভিযোগ করছেন, তারাই শিক্ষাঙ্গনে সরস্বতী পুজোকে এদেশের সংস্কৃতি বলে দাবি করছেন।

কংগ্রেস বিধায়ক কানিজ ফাতিমার নেতৃত্বে মুসলিম পড়ুয়ারা হিজাব পরার দাবিতে প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান।  তাঁরা স্লোগান দেন, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস। গুণ্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।’ বিধায়ক ফাতিমা বলেন, তিনি কর্ণাটক বিধানসভায় হিজাবের অনুমতির বিষয়টি উত্থাপন করবেন।