সাধারণ মানুষের নাম বাদ
কুকুরের নামে ভোটার কার্ড! কমিশনকে তোপ দাগলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

- আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 34
পুবের কলম প্রতিবেদক: স্বশাসিত সংস্থা এবং এজেন্সির ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের আধিপত্য বিস্তার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার নির্বাচন কমিশনও বিজেপির আজ্ঞাবহনে ‘তল্পিবাহক’ হয়ে উঠেছে সেটাই প্রকাশ পেল বিহারের একটি ঘটনায়। যা নিয়ে একযোগে সোমবার বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও অনুপ্রবেশ থেকে পহেলগাঁও ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র দফতরের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে নিশানা করলেন শাহকে।
ভোটার তালিকা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্যই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে স্পেশাল ইনেটনসিভ রিভিউ (এসআইআর)। কিন্তু সেখানেই ধরা পড়ল চরম বিস্ময়কর নজির। দেখা গেল, বিহারে এক কুকুরের নামে রেসিডন্সিয়াল সার্টিফিকেট দাখিল করে ভোটার কার্ড রয়েছে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন বাসস্থানের প্রমাণপত্র হিসেবে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট গ্রহণও করেছে।
যে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে ইংরেজিতে লেখা ‘ডগ বাবু’র নামে। এদিন দিল্লি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, বিহারে কুকুরের নামেও ভোটার কার্ড করিয়েছে বিজেপি। অথচ সাধারণ মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে কমিশন। দিল্লি যাওয়ার আগেই কমিশনকে বিজেপির তল্পিবাহক আখ্যা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার সংসদে বিরোধীদের পক্ষ থেকে সংসদে বিহারের কুকুরের নামে ভোটার কার্ড বিষয়টি নিয়ে এসআইআর -এর গাফিলতি নিয়ে ভরা সংসদে প্রশ্ন তুললেন অভিষেক। যে ভোটার কার্ডটির নথি এসআইআর -এর কাছে জমা পড়েছে তা একটি কুকুরের। যেখানে তার নামের জায়গায় লেখা আছে ডগবাবু, পিতার নাম – কুত্তা বাবু, মাতার নাম -কুতিয়া দেবী। এই তথ্য দিয়েই রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট জমা পড়েছে বিহারের নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষের কাছে।
সোমবার সংসদে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট এমন একটা নথি যা এসআইআর -এর জন্য নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছে। এখান থেকেই উঠছে প্রশ্ন, যেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণের নামে কুকুরের নামে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট জমা পড়ে। কিন্তু সাধারণ মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। মানুষের ভোটাধিকার বাতিল করা হয় নানান যুক্তিতে। কিন্তু ভোটার কার্ড দিয়ে কুকুরকে খাতায় কলমে ভোটাধিকার দেওয়া হয়।
এই সূত্রে অভিষেক দাবি করেন, নির্বাচনের সময়ে ভোট লুঠ করে বিজেপিকে বাড়তি সুবিধে করে দেওয়ার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। অভিষেকের মতে, বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে যে অশুভ যোগাযোগ রয়েছে, বিহারে কুকুরের রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার ঘটনাই তার প্রমাণ।
বিজেপির নির্দেশে এই প্রথম নয়, বছরের পর বছর যে নির্বাচন কমিশন কাজ করেছে, তার উদাহরণ তুলে ধরে অভিষেক বলেন, একটা রাজনৈতিক দলকে সুযোগ করে দেবে বলে, তার আজ্ঞাবাহী হিসেবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। আগেও কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরীহ মানুষকে দিনের আলোয় গুলি করে ফেলল। কোভিডের দ্বিতীয় ওয়েভের সময়ে এক দফায় নির্বাচন না করে আট দফায় নির্বাচন করেছে। যতদিন গিয়েছে তত বিজেপির চাটুকারিতা বেড়েছে।
তবে বাংলার মানুষ যে এসআইআর’কে ভয় পায় না, তা এদিন স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, যে কোনও সময়ে নির্বাচন হলেই প্রস্তত বাংলার শাসকদল। সেই কথা বুঝতে পেরেই প্রতিহিংসা পরায়ণ বিজেপি রাজ্যে রাজ্যে বাঙালিদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে।
সেই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, বিজেপির নির্লজ্জ রাজনীতির প্রমাণ হল, বাংলায় হেরেছে বলে বাংলার প্রাপ্য বরাদ্দ আটকানো। এবার বাংলার মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে। বাংলাভাষী মানুষকে অত্যাচার করছে। অভিষেক এদিন বাংলার ঐতিহ্য প্রসঙ্গে বলেন, মাদার টেরেসাকে ধরলে বাংলা থেকে চারটে নোবেল এসেছে। কিন্তু বাংলার ইতিহাস এরা জানে না।