বিরোধী দলনেতার আইনি রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করল হাইকোর্ট, ধাক্কা গেরুয়া শিবিরে
- আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার
- / 138
পুবের কলম প্রতিবেদক: গত কয়েকদিন ধরেই এসআইআর নিয়ে সুর চড়াচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর মধ্যেই শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশে খারিজ করা হল তাঁর এফআইআর সুরক্ষা। অনির্দিষ্টকালের জন্য হাইকোর্ট কাউকে অন্তর্বর্তীকালীন আইনি রক্ষাকবচ দিতে পারে না।
এই মন্তব্য করে কলকাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত পূর্ববর্তী বিচারপতি রাজশেখর মান্থার শুভেন্দু অধিকারীকে দেওয়া আদালতের সুরক্ষাকবচের নির্দেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে চলা মোট ২০টি মামলা খারিজের আবেদন জানানো হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে।
এর মধ্যে পূর্ববর্তী ১৫টি মামলা খারিজ করার নির্দেশ দেয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ। সেই সঙ্গে মানিকতলাসহ আরও ৫টি মামলার ক্ষেত্রে সিট গঠনের নির্দেশ জারি করা হয়। ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে আদালতের এই নির্দেশের ফলে অস্বস্তিতে শুভেন্দু অধিকারী।
বিচারপতি রাজশেখর মান্থার দেওয়া আদালতের রক্ষাকবচের জন্যই শুভেন্দু অধিকারী একচেটিয়াভাবে আইনি অতিরিক্ত সুবিধে পাচ্ছিলেন তা খর্ব করা হল। এই রক্ষাকবচ থাকার ফলেই একাধিক সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্যের পরেও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছিল না।
প্ররোচনামূলক কাজ করার জন্য আত্মবিশ্বাস দিচ্ছিল। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে গাড়ি চাপা পড়ে মানুষের মৃত্যুর পরে তাঁর বিরুদ্ধে নিতে পারছিল না পুলিশ। তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী জানান, আইন সবার জন্য সমান, আইনের উর্ধে কেউ নন, আদালতের নির্দেশে আবার প্রমাণিত হল। এরপর আর শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা রইল না।
২০২১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে রাজশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে আইনি রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একটি মামলার শুনানির সময়ে শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, যদি বিরোধী দলনেতাকে প্রতিহিংসার রাজনীতির মাধ্যমে একাধিক মামলায় জর্জরিত করা হয়, তাহলে তো তিনি নিজের কাজে মন দিতে পারবেন না।
শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীর এই যুক্তি মেনে নিয়েছিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। সেই কারণে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এফআইআর না হওয়ার রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। আদালতের এই নির্দেশের সৌজন্যে রাজ্যে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করার আগে অভিযোগকারীদের আদালতের পরামর্শ নিতে হত।
শুভেন্দু অধিকারীর এই একতরফাভাবে আইনি রক্ষাকবচ পাওয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল রাজ্য সরকার। পাল্টা মামলা করা হয়েছিল সরকারের তরফে। এমনকী সেই সময় কলকাতা হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার দেওয়া নির্দেশ খারিজও হয়ে যায়। এরপর শুভেন্দু অধিকারীর মামলা যায় শীর্ষ আদালতে।
সেখানে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার দেওয়া রায় বহাল থাকে। তখন এফআইআর না হওয়ার রক্ষাকবচ পেলেও তার মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের জন্য হতে পারে না বলেই মনে করছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তাঁর রায়েই শুভেন্দু অধিকারীর আইনি রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করা হল শুক্রবার। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারীর কোনও বক্তব্য থাকলে তাঁর আইনজীবী সোমবার তা জমা দিতে পারে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
এই প্রসঙ্গে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এই রায়ের ফলে শুভেন্দু অধিকারীর ‘মস্তানি’ বন্ধ হবে। এই ঘটনা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ফলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পুরনো মামলা নতুন করে করা যাবে।

















































