বিহারের পূর্ণিয়ায় ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে হত্যা, প্রাণ গেল এক পরিবারের ৫ সদস্যের

- আপডেট : ৭ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 201
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় কুসংস্কার ও ডাইনি অপবাদের ভয়ঙ্কর পরিণতি সামনে এল। একটি আদিবাসী পরিবারের পাঁচ সদস্যকে পিটিয়ে, তারপর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে গ্রামবাসীরা। নিহতরা হলেন বাবুলাল ওরাওঁ, সীতা দেবী, মনজিত ওরাওঁ, রানিয়া দেবী এবং তাপতে মোসমাট।
ঘটনাটি ঘটে টেটগামা গ্রামে। গ্রামে কয়েকজনের মৃত্যু ও অসুস্থতার পেছনে কালোজাদু বা ডাইনি সন্দেহে আক্রান্ত পরিবারটির বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই দলবেঁধে গ্রামের লোকজন ওই পরিবারের বাড়িতে হামলা চালায়। এক শিশু সদস্য কোনোমতে প্রাণে বাঁচলেও মানসিকভাবে সে ভীষণ ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এখনও পর্যন্ত কোনো FIR দায়ের হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত তদন্ত এগোনো সম্ভব হচ্ছে না। গ্রামে বর্তমানে ব্যাপক পুলিশি টহল চলছে। সোমবার গ্রাম প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে আতঙ্কে।
পুলিশ জানিয়েছে, রামদেব ওরাওঁ নামের এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন, কিন্তু চিকিৎসকের বদলে তন্ত্র-মন্ত্রের আশ্রয় নেওয়া হয়। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। একই পরিবারের এক শিশুও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই কালোজাদুর অভিযোগ তুলে আক্রান্ত পরিবারের বিরুদ্ধে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
স্থানীয় পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মৃতদেহগুলি। এখনো স্পষ্ট নয়—পিটিয়ে মারা হয়েছে, নাকি জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় বিহারের বিরোধী নেতা তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “বক্সারে তিনজন, ভোজপুরে তিনজন, সিওয়ানে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, আর পূর্ণিয়ায় একসাথে পাঁচজনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ঘুমাচ্ছেন, দুষ্কৃতীরা জেগে ঘুরছে!”
ঘটনাটি সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো কুসংস্কার দূরীকরণে প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে এবং অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।