পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২০২৫ সাল বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর হিসেবে নথিভুক্ত হতে পারে, এমন সতর্কতা দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (C3S)-এর বিজ্ঞানীরা। তাঁদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৪ সালই সম্ভবত এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উষ্ণ বছরের রেকর্ড ধরে রাখবে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলনে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো নিয়ে দেশগুলো উল্লেখযোগ্য কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ জলবায়ু–সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করতে চাইছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হয়েছে।
C3S–এর মাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরও বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা শিল্পপূর্ব যুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে পারে। এর ফলে পরপর তিন বছর এই সীমা অতিক্রমের নজির দেখা যাবে। সংস্থাটির জলবায়ু কৌশলবিষয়ক প্রধান সামান্থা বার্জেস বলেন, “এগুলো শুধু সংখ্যা নয়; দ্রুত পরিবর্তিত জলবায়ুর বাস্তব চিত্র।”
চলতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চরম আবহাওয়া দেখা গেছে। ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগিতে ২০০–র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। স্পেনে ঘটেছে তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এসব দুর্যোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে।
২০২৪ সাল ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর। প্রাকৃতিক ওঠানামা থাকলেও বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ সময় ধরে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ধারাবাহিক প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করছেন, যার মূল কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো থেকে তৈরি গ্রিনহাউস গ্যাস।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, বৈশ্বিক রেকর্ড অনুযায়ী গত দশটি বছরই ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্য থাকলেও, জাতিসংঘ সম্প্রতি জানিয়েছে, এ লক্ষ্য এখন আর বাস্তবে অর্জনযোগ্য নয়। ফলে যত দ্রুত সম্ভব নিঃসরণ কমানো ছাড়া বিকল্প নেই। সিথ্রিএস ১৯৪০ সাল থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রার তথ্য সংগ্রহ করছে এবং ১৮৫০ সালের রেকর্ডের ভিত্তিতে তা যাচাই করে থাকে।


































